গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে “এলজিইডি” ও “জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)”র অর্থায়নে গোবিন্দগঞ্জের বড়দহ সেতু থেকে সাঘাটার ত্রিমোহনী সেতু পর্যন্ত ৫.৩ কিলোমিটার বাধঁ নির্মানের অনিয়ম ও জবর দখলের অভিযোগ উঠেছে। গাইবান্ধা- ৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ এলজিইডির সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন চৌধুরীর ছোট ভাই লিটন চৌধুরীর প্রভাব খাটিয়ে সরকারি জায়গা ব্যবহার না করে ব্যক্তি মালিকানাধীন ৪ বিঘা জমির প্রায় ৪০ লাখ টাকা ক্ষতি করে বাধঁ নির্মান করছে “বড়দহ পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি”। বাধঁ নির্মানের বিল স্থগিত চেয়ে ও বাঁধ নির্মানে অনিয়ম তদন্ত করতে (৫ আগস্ট ) বৃহস্পতিবার বিকালে গাইবান্ধ জেলা প্রশাসক ও এলজিউডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তালুক সোনাইডাঙ্গা গ্রামের ভুক্তভুগী কৃষক ময়েন উদ্দিন।
অভিযোগ সুত্রে জানাযায়, “এলজিইডি” ও “জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)”র অর্থায়নে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা “বড়দহ পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি”র মাধ্যমে কাটাখালি নদীর তীরে ভুমি নশকা/ম্যাপ অনুযায়ী সরকারি রাস্তার উপর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মান করা হচ্ছে। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বড়দহ সেতু থেকে সাঘাটা উপজেলার ত্রিমোহনী সেতু পর্যন্ত ৫.৩ কিলোমিটার এই বাঁধ নির্মানের সরকারি জায়গা ব্যবহার করার কথা থাকলেও সরকারি জায়গা নিচু হওয়ায় ব্যক্তি মালিকানা জমি দিয়ে বাধঁ নির্মান করা হচ্ছে। এতে ভুক্তভুগী ময়েন উদ্দিন আকন্দের ৪ বিঘা জমির (যার বাজার মুল্য প্রায় ৪০ লাখ টাকা) ক্ষতি হয়েছে।
অভিযোগ সুত্রে আরো জানা যায়, “বড়দহ পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি”র সভাপতি সজিব আকন্দ, সাধারন সম্পাদক মো: নওসা মিয়া, হরিরামপুর ইউপির সাবেক মেম্বার মো: আবদুল ওয়াহেদ মিয়া, স্থানীয় যুবক মো: বিপুল আকন্দ, মো: সাদা মিয়া ও মো: ফিরোজুল ইসলাম, গাইবান্ধা- ৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ এলজিইডির সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন চৌধুরীর ভয় দেখিয়ে বাধঁ নির্মানের চাদাবাজির মিথ্যা মামলা দেয়ার হুমকি এবং নির্মানাধীন বাধের বিল তোলার আগে আইনের আশ্রয় নিলে ভুক্তভুগিকে প্রাণে মারার হুমকি দেয়।
ভুক্তভুগী কৃষক ময়েন উদ্দিন আকন্দ জানান, “শনিবার (১ আগষ্ট) বিকালে তালুক সোনাইডাঙ্গা গ্রামের যুবক, রংপুর পুলিশ লাইনের কর্মরত পুলিশ সদস্য শাহরিয়ার কবিরের নেতৃত্বে ২০/২৫ জন মিলে আমার রেকর্ডকৃত জমি দখল করে। জমি দখলের দুই দিন পরে শতাধিক ভারাটিয়া সন্ত্রাসীসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় মঙ্গলবার (৩ আগস্ট ২০২১) সন্ধ্যা ৭.৩০ ঘটিকা থেকে স্কেলেভেটর (ভেকু) মেশিন দিয়ে মাটি কাটতে শুরু করে। আমি ও পরিবারে সদস্যরা বাধা দিলে আমাদের হত্যার চেষ্টা করে। বাড়ি ঘিরে রাখে। তারা ভোর পর্যন্ত আমার ধান শুকানো উঠান থেকে স্কেলেভেটর (ভেকু) মেশিন দিয়ে মাটি তুলে আমার জমির উপর দিয়ে বাঁধ নির্মান কাজ শেষ করে।”
এ বিষয়ে গাইবান্ধা- ৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য প্রকৌশলী, মনোয়ার হোসেন চৌধুরীর ভাই লিটন চৌধুরীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, “আমাদের নাম ব্যবহার করে অন্যায় কাজ করবে কেন ? আমরা কি জড়িত নাকি। পানি ব্যবস্থাপনা কমিটি কাজ করে। আমরা সার্বক সহযোগীতা করি। এ ছাড়া আর কিছু না।”
আভিযোগের তদন্ত বিষয়ে গাইবান্ধা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আহসান হাবিব জানান, “ অভিযোগটি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।”
জেলা এলজিইডি অফিস সুত্রে জানান যায়, “এলজিইডি” ও “জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)”র অর্থায়নে ১ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বড়দহ সেতু থেকে সাঘাটা উপজেলার ত্রিমোহনী সেতু পর্যন্ত ৫.৩ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ নির্মান করছেন গোবিন্দগঞ্জ “বড়দহ পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি”।