তুচ্ছ ঘটনায় সাতক্ষীরার বড় বাজারে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের উপর হামলার ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
শনিবার (৭ আগস্ট) বেলা ১২টায় সাতক্ষীরা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ হলরুমে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা বিএম আবদুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর এলাকার মৃত আবদুল মালেকের পুত্র আবদুল রহিম বাবু একজন নব্য সন্ত্রাসী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। বর্তমানে সুলতানপুর এলাকার অনেক সম্মানী মানুষ সন্ত্রাসী বাবুর কাছে অসম্মানীত হয়েছে। হয়েছে নির্যাতিত এবং মারপিটের শিকার অসংখ্য নিরীহ মানুষ। কাঁচা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় তার সন্ত্রাসী কার্যাকলাপের জন্য একটি লেবার বাহিনী রয়েছে।
গত ০৪ আগস্ট দুপুর আড়াইটার দিকে আমার বাড়ি ভাড়াটিয়া কামরুজ্জামানের ব্যবসায়িক পার্টনারের গলার আওয়াজ পেয়ে পাশর্^বর্তী মোজামের ভুট্টার মিলের অফিসে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম বাবু একজন ব্যক্তিকে আটকে রেখে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করছে। এর কারণ যানতে চাইলে বাবু বলে আমি তার কাছে টাকা পাবো। তখন আমি বলি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার দায়িত্ব আমি নিচ্ছি। তাকে ছেড়ে দাও। কিন্তু বাবু কথা না শুনে বাজারের লেবার বাহিনী ডেকে এনে তাকে বেধড়ক মারপিট করতে থাকে। আমার পুত্র সামিউল হাসান সজল এতে বাঁধা দিতে গেলে উত্তেজিত হয়। এ সময় আমার শ্যালক তৌহিদুজ্জামান চপল ও তার পুত্র তামজিদুজ্জামান বাড়ি ছুটে এসে প্রতিবাদ করলে বাবুর সন্ত্রাসী বাহিনী এবং ওয়াজেদ আলীর পুত্র কিশোর গ্যাংয়ের নেতা ই¯্রাফিল, কামাল, আবদুল জব্বারের পুত্র জাবেদ, তামিম, হাকিম, সবুজ, কাশেমসহ কতিপয় ব্যক্তি ছুটে এসে আমার পুত্র ও শ্যালকের পুত্রকে এলোপাতাড়ি মারপিট করতে থাকে। আমি ঠেকাতে গেলে আমাকেও মারপিট করে। এতে শ্যালক চপলের পুত্র তামজিদুজ্জামান মারাত্মক আহত হয়।
এঘটনায় আমরা আহত হলেও আগের তাদের মামলাটি রেকর্ড করা হয়। যদিও পরে আমাদের মামলাটিও রেকর্ড করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আবদুর রহিম বাবু তার অপকর্ম ঢাকতে নিজের ভাইপোর পেটে নিজেরা চুরিকাঘাত করে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন।
বর্তমানে নব্য সন্ত্রাসী আবদুর রহিম বাবুর সন্ত্রাসী কার্যকলাপের কারণে আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। সে প্রশাসন ও রাজনৈতিক ছত্র ছায়ায় এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ওই সন্ত্রাসী আবদুর রহিম বাবুর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে সাতক্ষীরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মোশাররফ হোসেন মশু বলেন, আবদুর রহিম বাবু বড় বাজারে সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছে। বাজার কমিটি খারাপ মানুষের হাতে চলে যাচ্ছে। আবদুর রহিম বাবু একজন সুদের কারবারী। বাবুর লোকজন মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে মারধর করেছে কিন্তু মামলা দিতে গেলে পুলিশ নিতে গড়িমসি করেছে। আবার যারা মারাধর করেছে তাদের মামলা নেওয়া হয়েছে প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধির চাপে। এটি দুঃখজনক। করোনা পরিস্থিতিতে মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কোন কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারছে না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সাতক্ষীরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মোশাররফ হোসেন মশু, সাবেক সদর উপজেলা কমান্ডার মাহবুবুর রহমান, বীরমুক্তিযোদ্ধা রফিকুজ্জামান খোকন, বীর মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুর রহমান প্রমুখ।
এদিকে, অভিযুক্ত আবদুর রহিম বাবু বলেন, আমি সদরের ভালুকা চাঁদপুর এলাকার আনিস নামক এক ব্যক্তির নিকট টাকা পাই। গত ০৪ আগস্ট দুপুরে আমি চপলের বাড়ির কাছে আনিসকে খুঁজে পাই। এনিয়ে চপল ও তার বাহিনী আমাকে আক্রমণ করলে আমার ভাইপো ইসরাফিল ঠেকাতে আসে। তখন চপলের ছেলে তামজিদুজ্জামান ইসরাফিলকে ছুরিকাঘাত করে মারাত্মক আহত করলে তাকে সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে খুলনা মেডিকেল হাসপাতালে রেফার্ড করে। এদিকে, তামজিদুজ্জামান ওই সময় পা পিছলে পড়ে চোখের উপর আঘাতপ্রাপ্ত হয়। আমরা কেউ তাকে আঘাত করিনি।