স্বেচ্ছাশ্রমের বিনিময়ে গণটিকা কার্যক্রমে সেবা দিতে এসে দু’দফা লাঞ্চনার শিকার হয়েছেন খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার দিঘলিয়া (দঃ) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সিদ্দিকুর রহমান। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর উপজেলা প্রাইমারি শিক্ষকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয়। উপজেলা প্রশাসন শিক্ষকদের সন্মান রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিতে ব্যর্থ হলে আজ থেকে উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষক গণটিকা কার্যক্রমে অংশ নিবেন না বলে সাব জানিয়ে দিয়েছেন দিঘলিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি শেখ আল মামুন।
লাঞ্চিত প্রধান শিক্ষক মুঠোফোনে জানান, শনিবার সকাল ৯ টা থেকে উপজেলা প্রশাসনের অনুরোধে সরকারের গণটিকা কার্যক্রমে অংশ নিতে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে দিঘলিয়া এম এ মজিদ মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করতে থাকেন ওই শিক্ষক। দুপুর ১ টার দিকে তাঁর নিকট এক যুবক এসে কৈফিয়ত তলব করতে থাকে এই বলে যে, ওই শিক্ষকের নিকট টিকার কার্ড কম কেন? উত্তরে তিনি ওই যুবকের উদ্দেশ্যে বলেন যে এ ব্যাপারে তিনি জানেন না। শিক্ষকরা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ করতে এসেছেন। দায়িত্বরত স্বাস্থ্য কর্মীরা এ ব্যাপারে ভালো বলতে পারবেন। এই কথা বলার পর ওই যুবক আরো উত্তেজিত এবং ক্ষিপ্ত হয়ে ওই প্রধান শিক্ষককে মারতে উদ্ব্যত হয় এবং হুমকি দিয়ে তার সংগে থাকা অন্য যুবকদের বলে দরজা বন্ধ করে দিতে। একজনও বের হতে পারবেন না। কোন কাজ চলবে না বলে উচ্চ শব্দে চিৎকার করে। স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায় ওই যুবক দিঘলিয়া গ্রামের বাবু খান। সে দিঘলিয়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোল্যা ফিরোজ হোসেনের সহচর। ঘটনার ১ ঘন্টা পর ওই চেয়ারম্যান এসে ওই প্রধান শিক্ষককে আবারও উল্লিখিত ঘটনার সূত্র ধরে শাসিয়ে বলতে থাকেন যে, বড় ভাই’র সংগে তর্ক করেছেন কেন? আপনি কে? একে আটকিয়ে রাখ। আপনার মতো বহুত লোক সাইজ করেছি। আপনার বেলায় এর ব্যতিক্রম হবে না বলে তিনি উচ্চ স্বরে ঘোষনা করেন।
ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ঘটনার সময় উপস্থিত দিঘলিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি শেখ আল মামুন, দিঘলিয়া ২ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোঃ নাজমুল হোসেনসহ ঐ বিদ্যালয়ের কয়েকজন সহকারী শিক্ষক এবং পিয়নকে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা ঐ শিক্ষক লাঞ্চিত হওয়ার বিষয়টি সত্যতা স্বীকার করেন।