ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের কে.এ খান হাফেজী মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ উল্লাহর বিরুদ্ধে ১০ শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত করে গুরুতর জখম করায় অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগে এলাকাবাসী শনিবার (৭ আগষ্ট) রাতে অভিযুক্ত শিক্ষক হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ উল্লাহকে ধরে পুলিশে দিয়েছে।
করোনাকালীন সময়ে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে কে.এ খান হাফেজী মাদ্রাসা চালু রেখে পড়াশোনা চালিয়ে আসছিলেন মাদ্রাসাটির একমাত্র শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহ। ৭ আগস্ট দুপুরে ৩ টা দিকে শিশু কিশোর বয়সী শিক্ষার্থীরা দুষ্টুমী করছিলো। ঐ সময়ে ঘুমিয়ে থাকা শিক্ষক হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ উল্লাহর ঘুম ভেঙে যায়। তাই সে ক্ষেপে গিয়ে কক্ষের দরজা আটকে ১৩ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১০ জনকে বেদম প্রহার করেন। এতে শিক্ষার্থীরা ব্যাথায় কান্নাকাটি করতে থাকলে সকল শিক্ষার্থীকে কক্ষের মধ্যে আটকে রেখে বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। মারধরের বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য সকল শিক্ষার্থীকে ভয়ভীতি দেখানো হয়। মাগরিবের নামাজের সময় পিছন থেকে সুকৌশলে নলছিটি উপজেলার বারৈকরন গ্রামের প্রবাসী আবদুর রহিমের পুত্র মোঃ সিয়াম (৯) পালিয়ে কাঁদতে কাঁদতে পোনাবালিয়া বাজারে গেলে এলাকাবাসী বিষয়টি অবহিত হয়। এদিকে মাদ্রাসা শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহ মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মোঃ মোরশেদ খানকে ঘটনাটি জানিয়ে দ্রুত সকল শিক্ষার্থীকে বাড়ি চলে যাওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে।
অপরদিকে পোনাবালিয়া বাজারের অন্তত দুই শতাধিক ব্যক্তি মাদ্রাসা ঘেরাও করে শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহ কে আটক করে এবং গুরুতর জখম হওয়া চার শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম (১০), মোহাম্মদ সিয়াম (৯), মো. আমিনুল (৯) এবং একই গ্রামের মো. ইয়াছিন (১৪) কে উদ্ধার করে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসা দেয়। এদের মধ্যে গুরুতর আহত শিশু সিয়াম কে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। আহত অপর শিক্ষার্থীরা যে যার বাড়িতে চলে যায়।
খবর পেয়ে রাতেই ঝালকাঠি সদর থানা পুলিশ ওই মাদ্রাসায় গিয়ে শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহ কে আটক করে নিয়ে আসেন।
সদর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ খলিলুর রহমান বলেন, শিশু শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের দায়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এক শিক্ষার্থীর পিতা বাদী হয়ে অভিযোগ দিয়েছেন। শিক্ষার্থী পেটানো এবং সরকারের নির্দেশ অমান্য করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার দায়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।