কুমিল্লার হোমনায় সিএনজি চালকের হর্ন বাজানোকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। এতটিতে উপজেলার ভাষানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকসহ ৫৫ জনের নামে এবং অজ্ঞাত আরও ৩ শ’ জনকে আসামী করা হয়েছে। গতকাল রবিবার হোমনা থানায় এ দুটি মামলা হয়।
কামরুল হাসান ও আক্তার হোসেন বাদি হয়ে দুটি মামলা করেন। একটিতে প্রধান আসামী করা হয় ভাষানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান কামরুল ইসলামকে এবং অপরটির প্রধান আসামী করা হয় উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক মো. সাদেক হোসেন সরকাকে। এ ঘটনায় দুটি মামলার এজাহার নামীয় আট জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরিস্থিতি এখনও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বাজার ও আশপাশের এলাকা পূরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। ওই এলাকায় যানবাহন চলাচল নেই বললেই চলে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বিকাল চার টার সময় উপজেলার ভাষানিয়া ইউনিয়নের ওমরাবাদ গ্রামের সিএনজি চালক মো. সাব্বির (১৯) সিএনজি নিয়া কাশিপুর গ্রামের কাশিপুর বাজারে যায়। সেখানে কাশিপুর গ্রামের কয়েকজন লোকের সামনে জোরে হর্ন বাজাতে থাকলে বিরক্ত হয়ে কাশিপুর গ্রামের এক ব্যক্তি ওই চালককে চর থাপ্পর মারে। সিএনজি চালক সাব্বির এই ঘটনা তার গ্রামের লোকজনকে জানায়। খবর পেয়ে ওই দিন বিকেলে ওমরাবাদ গ্রামের কয়েকশ লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে কাশিপুর বাজারে কাশিপুর গ্রামবাসির উপর হামলা করে। পরে কাশিপুর গ্রামের লোকজন সংগঠিত হইয়া পাল্টা হামলা করে। এরই জের ধরে পরের দিন শনিবার আবারও দুই গ্রামবাসীর মধ্যে কাশিপুর বাজারে হামলা সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে কাশিপুর বাজারের অন্তত ১৬ টি দোকানে ভাংচূড়ের ঘটনা ঘটে। এতে গ্রামের অন্তত ২০ জন আহত হয়। শনিবার কাশিপুর বাজারে হোমনা, মেঘনা, তিতাস, মুরাদনগর ও জেলা থেকে ডিবি পুলিশসহ অতিরিক্ত দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ওই সময় পুলিশ তিন রাউন্ড টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
হোমনা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কায়েস আকন্দ বলেন, শুক্রবার বিকেল চারটায় ওমরাবাদ গ্রামের সিএনজি চালক সাব্বির কাশিপুর বাজারে হর্ন বাজানোকে কেন্দ্র করে ওমরাবাদ এবং কাশিপুর গ্রামের মধ্যে দুই দিন সংঘষের্র ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় রবিবার দুটি মামলা হয়েছে। এতে এক পক্ষে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম অপর পক্ষে উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন-সম্পাদক মো. সাদেক হোসেন সরকাকে আসামী করে ৫৫ জনের নামে ও আরও অন্তত তিন শ’ অজ্ঞাত নামে মামলা হয়েছে। দুই পক্ষের আট জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামীদের গ্রেফতারে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।