করোনা সংক্রামন প্রতিরোধ ও চিকিৎিসা সেবায় দেশের নামীদামী হাসপাতালে যখন টালমাটাল অবস্থা। তখন বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্েরর ডাক্তাররা তাদের স্বল্প লোকবল ও স্বাস্থ্য সরঞ্জাম নিয়ে মনোবল ও আন্তারিকতার সাথে চিকিৎসা সেবা দিয়ে মহামারি করোনার ব্যাপক সংক্রামন ও ব্যাপক মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেছেন উপজেলাবাসীকে। আর জীবনের চরমঝুকি নিয়ে দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে মানুষের আস্থা ও প্রশংসা অর্জন করেছেন তিনি হলেন বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: গোলাম রাব্বানী।
বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্র ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত বছর করোনার ব্যাপক সংক্রামন ও মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ায় বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের করোনা রোগিদের জন্য খোলা হয় করোনা আইসোলেসন সেন্টার। এ ছাড়া বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনা রোগিদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য গঠন করা হয় ভ্রাম্যমান মেডিকেল টীম। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সহ এই টিমের সদস্যরা এ্যাম্বুলেন্স নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনা রোগিদের বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষধপত্র সরবরাহ করেন। অল্প দিনেই এই ভ্রাম্যমান চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলে। এই ব্যবস্থা জাতীয় গণমাধ্যমে ব্যাপক ফলাও করে প্রকাশিত হলে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় দেশের অন্যান্য উপজেলায় বাগমারা করোনা চিকিৎসার মডেল বাস্তবায়ন শুরু করে। এ ছাড়া বাগমারার প্রত্যন্ত এলাকার করোনা উপসর্গ রোগিদের জন্য ২৪ ঘন্টা মোবাইলে ব্যবস্থা পত্র দেওয়া হয় এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্র থেকে।
এভাবে করোনা রোগিদের চিকিৎসা সেবায় একের পর এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করে করোনা চিকিৎসায় একটি রোল মডেলে পরিনত হয় বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্র। এরই ধারাবাহিকতায় স্থানীয় সাংসদ সদস্য ইঞ্জি এনামুল হক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্েরর চিকিৎসকদের অক্লান্ত পরিশ্রম দেখে মুগ্ধ হয়ে নিজ উদ্যোগে করোনা রোগিদের জন্য অক্্িরজেন মাপার জন্য পালস অক্্িরমিটার ও অক্্িরজেন তৈরির জন্য অক্্িরজেন কনসেটেটর প্রদান করেন। এ প্রসঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: গোলাম রাব্বানী বলেন, স্থানীয় সাংসদ সদস্য ইঞ্জি এনামুল হক বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্েরর জন্য অত্যন্ত আন্তরিক। তিনি গত বছর করোনা সংক্রামনের শুরুতেই সম্পূর্ন নিজেম্ব উদ্যোগে ও অর্থায়নে বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্র সহ রাজশাহী মেডিকেলে কর্মরত ডাক্তার নার্সসহ সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য উন্নতমানের মাস্ক ও পিপিই সরবরাহ করেন। ডাক্তার গোলাম রাব্বানী আরো বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠান হওয়ায় বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের লোকবল সংকট একটি প্রধান সমস্যা। আমরা বিষয়টি স্থানীয় সাংসদকে অবহিত করলে তিনি নিজ অর্থায়নে বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্েরর জন্য ৭ জন কর্মচারী দিয়েছেন। এভাবে বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্েরর জন্য স্থানীয় সাংসদ যথাসাধ্য চেষ্টা করে সেবার মান ব্যাপক উন্নত করেছেন।
বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্েরর সার্বক্ষনিক পর্যবেক্ষন ও ব্যবস্থাপনায় করোনা সংক্রামন থেকে সেরে ওঠেছেন উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফ আহম্মেদ,প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান, উপজেলা হিসাব রক্ষন অফিসের অডিটর নজরুল ইসলাম ও বাগমারা প্রেসক্লাবের সভাপতি আলতাফ হোসেন মন্ডল সহ বেশ কিছু করোনা রোগিরা জানান, বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্েরর ডাক্তারদের ব্যবস্থাপনা ও তাদের আন্তরিক চিকিৎসা সেবায় আমরা করোনা সংক্রামন থেকে সুস্থ হয়েছি। তারা হাসপাতালের টিএইচও ডাক্তার গোলাম রাব্বানীর চিকিৎসা সেবা ও আন্তরিকতায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।
এদিকে বাগমারার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের লোকজনকে করোনা সংক্রামনের হাত থেকে রক্ষার জন্য ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহন করেছেন সাংসদ এনামুল হক। তারই নির্দেশনায় বাগমারায় চলমান করোনা সংক্রামন প্রতিরোধে সার্বিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: গোলাম রাব্বানী বলেন, বাগমারা একটি প্রত্যন্ত ও বৃহৎ উপজেলা। নানান সীমাবদ্ধতা ও স্বল্পতার মাঝেও মহামারি করোনা সংকট মোকাবেলায় স্থানীয় সাংসদের উৎসাহ ও সহযোগিতায় আমরা মানুষের দৌড়গোড়ায় চিকিৎসা সেবা দিে যাচ্ছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফ আহম্মেদ জানান, নানান সীমাবদ্ধতার পরও বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্েরর চিকিৎসা সেবার মান সন্তোষজনক। আমি নিজেই করোনয় আক্রান্ত হয়েছিলাম। তাদের চিকিৎসা ও পরামর্শেই আমি সুস্থ হয়েছি। এ বিষয়ে স্থানীয় সাংসদ ইঞ্জি এনামুল হক জানিয়েছেন, আমারা গণমাধ্যম কর্মীরা সহ বাগমারাবাসী জানেন ২০২০ সালের মার্চ থেকে বিশ্বব্যাপি করোনা সংক্রামন ছড়িয়ে পড়ার পর এলাকাবাসীর সংক্রমণ প্রতিরোধে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্র নিরলস ভাবে কাজ করে চলেছে।