৪ সদস্য বিশিষ্ট সাইদের পরিবার। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। সংসারে ছোট ১ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে। বাস করেন রেলের জমিতে। গোমস্তাপুর উপজেলার আলিনগর ইউনিয়নের মকরমপুর এলাকার বাসিন্দা জালালউদ্দিনের ছেলে আবু সাইদ (৩৫)। পরিবারের জীবিকা নির্বাহের তাগিতে আখের রস পিষানো মেশিনের চাকা ঘুরিয়ে রস বিক্রি করেন আবু সাইদ। সংসার চলে তাঁর এ আয়ের উৎস ।
রহনপুর বড়বাজারের ব্যবসায়ী মাসুম জানান, প্রতিদিন সকালে আবু সাইদ রহনপুর বড় বাজারস্থ রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের সামনে আখের রস বিক্রি করেন। চাকা ঘুরানো মেশিনে আখ পিষিয়ে তা বিক্রি করেন। অত্যান্ত সাদাসিদে ও সরল মন তাঁর। ৫ থেকে ৬ বছর হতে এ স্থানে রস বিক্রি করে জনগণের তৃষ্ণা মেটান। নিজের জমিরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আখ যোগাড় করে বিক্রি করে থাকেন।
আবু সাইদ বলেন, গত ৫ বছর হতে আখের রস ও আখ বিক্রি করে সংসার চালান। তাঁর কোন জমি না থাকলে অন্যের জমিতে শ্রমিকের কাজ করে থাকে। সারা বছর আখ বিক্রি করতে না পারলেও ৪ মাস এ কাজে নিয়োজিত থাকে। প্রথমে বিভিন্ন এলাকা থেকে আখ সংগ্রহ করে বিক্রি শুরু করেন। পরে ধার দেনা করে ঠেলা গাড়িতে হাত দিয়ে চাকা ঘুরানো মেশিন ক্রয় করেন। তিনি এলাকার এক ব্যক্তির কাছে ৪ বছের জন্য ৩০ হাজার টাকায় বর্গা জমি নেন। সেখানে প্রতিবছর আখ চাষবাস করছেন। আর ওই জমির আখ সংগ্রহ করে মেশিনে তা রস করে বিক্রি করা হচ্ছে । অনেক সময় গোটা আখও বিক্রি করে থাকেন। করোনা সময় মাদ্রাসা ছুটি থাকায় একমাত্র ছেলে মোমিন প্রতিনিয়ত তাঁকে সহায়তা করছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন বাড়ি থেকে ৪০/৫০টি আখের চামড়া ছড়িয়ে বাজারে নিয়ে যান। চাকা ঘুরানো মেশিনের মাধ্যমে তা রস করে জনগনের কাছে বিক্রি করেন। একটা আখ থেকে ৩/৪ গ্লাস রস হয়ে থাকে। এক গ্লাস রস ১০ টাকা করে বিক্রি করছেন। দিনে ৭'শ থেকে ৮'শ টাকা পর্যন্ত রস বিক্রি করেন। খরচ বাদে আয় করেন তিনশ থেকে সাড়ে তিনশ টাকা পর্যন্ত। এভাবেই চলছে তাঁর সংসার। এদিকে সাইদ জানান,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য উপহারের বাড়ি দিলেও তাঁর ভাগ্যে জুটেনি। তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে বাড়ি পাবার আশায় জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়েছিলেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মংলু জানান,আবু সাইদ খুব দরিদ্র ঘরের সন্তান। কৃষি কাজ ও আখের রস বিক্রি সংসার চালান। যেখানে তিনি পরিবার নিয়ে বাস করছেন সে জায়গাটি রেলওয়ের জমিতে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপহারের বাড়ির পাবার জন্য সাইদ আবেদন করেন নি। যদি করেন তাহলে পরবর্তী বাড়ি পায় তাঁর জন্য চেষ্টা করবেন ।