‘সাকিব ভাই, তাড়াতাড়ি আউট করেন, বাসায় যাব’Ñউইকেটের পেছনে নুরুল হাসানের বলা কথাটা এখন ভাইরাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সাকিবও স্পিনে ঢেলে দিয়েছেন বিষ; তাতেই নীল অস্ট্রেলিয়া। ম্যাথু ওয়েডের দলকে ৬২-তে থামিয়ে দাপুটে জয়ে সিরিজ শেষ করল বাংলাদেশ। আর আগের ম্যাচে এক ওভারে ৫ ছক্কার দুঃস্মৃতি সাকিব ভুলিয়েছেন দারুণভাবে। একটা মাত্র ওভারে চ্যাম্পিয়ন কোনো পারফর্মারের ক্যারিয়ার যে এলোমেলো হয়ে যায় নাÑসাকিব বোঝালেন আরো একবার। ৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে তৃপ্তির জয়ের নায়ক সাকিবই। টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এটাই সেরা পারফর্ম্যান্স কোনো বাংলাদেশি বোলারের। আগের সেরা ছিল এই সিরিজেই নাসুম আহমেদের। পাশাপাশি অনন্য এক ‘ডাবল’ করে ম্যাচ ও সিরিজসেরার পুরস্কারও জিতেছেন সাকিব। টেস্ট আর ওয়ানডেতে এক হাজার রান ও ১০০ উইকেটের মাইলফলকে পা রেখেছেন অনেকে। কিন্তু প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে টি-টোয়েন্টিতেও সেই কীর্তি এখন এই অলরাউন্ডারের। সোমবারের ম্যাচ শুরু করেছিলেন ৯৮ উইকেট নিয়ে। চারজনকে ফেরানোয় দ্বিতীয় বোলার হিসেবে পা রাখলেন ১০০ উইকেটের পৃথিবীতে। শ্রীলঙ্কার লাসিথ মালিঙ্গার উইকেট ১০৭টি আর সাকিবের ১০২টি। টি-টোয়েন্টিতে অনেক আগেই হাজার রানের দেখা পেয়েছিলেন সাকিব। সব মিলিয়ে এই ফরম্যাটে তাঁর রান এক হাজার ৭১৮। টি-টোয়েন্টির আগে টেস্ট আর ওয়ানডেতেও এক হাজার রান এবং ১০০ উইকটের চূড়া ছুঁয়েছেন এই অলরাউন্ডার। তাই প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে তিন ফরম্যাটেই হাজার রানের পাশাপাশি ১০০ উইকেটের কীর্তি শুধুই সাকিবের। এমন অর্জনের ভাগটা তিনি দিলেন সতীর্থদেরও, ‘অবশ্যই ভালো লাগে এ রকম কোনো অর্জন যখন হয়। ব্যক্তিগত অর্জনগুলো অবশ্যই অনুপ্রাণিত করে দলের হয়ে ভালো খেলার জন্য। তবে এটা কখনোই সম্ভব হতো না, এ যাবৎকালে যতজন সতীর্থের সঙ্গে খেলেছি, তাঁদের সাপোর্ট না পেলে। তাঁদের সাপোর্ট, কোচিং স্টাফ-দর্শক, সবার সাপোর্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। খুব খুশি। এবং আমার মনে হয় আমি আরো অনেক দিন অবদান রাখতে পারবÑসেই চেষ্টাই থাকবে আমার।’ ১০০ টি-টোয়েন্টি উইকেট নেওয়ার দৌড়ে সাকিবের পরই আছেন নিউজিল্যান্ডের টিম সাউদি (৯৯ উইকেট) আর আফগানিস্তানের রশিদ খান (৯৫ উইকেট)। তবে হাজার রান থেকে দুজনই অনেক দূরে। সাউদির রান ২৪৯, রশিদ খানের ১৭৯। অনন্য এই ডাবলের দ্বিতীয় সঙ্গী পেতে হয়তো দীর্ঘ অপেক্ষাই করতে হবে সাকিবকে। বাংলাদেশের হয়ে এবারের সিরিজে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭ উইকেট সাকিবের। আর ব্যাট হাতে করেছেন বাংলাদেশের পক্ষে সবচেয়ে বেশি ১১৪ রান। সোমবার ১১ রানে ব্যাট করার সময় টেলিভিশনে ভেসে উঠেছিল একটা পরিসংখ্যান। এই ফরম্যাটে আগের ৮৩ ম্যাচের ৮২ ইনিংসে কখনো এলবিডাব্লিউ হননি সাকিব! টানা সর্বোচ্চ ৮৫ ইনিংসে এলবিডাব্লিউ না হওয়ার রেকর্ড ভারতীয় সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির। তবে ধোনিকে ছোঁয়া হয়নি সাকিবের। পরিসংখ্যানটা দেখানোর কিছুক্ষণ পরই ৮৩তম ইনিংসে অ্যাডাম জাম্পার বলে হলেন এলবিডাব্লিউ! সব পাওয়ার দিনে এটুকুই যা আফসোস।