সাতক্ষীরায় জলাবদ্ধতায় পচে যাওয়া ধান নিয়ে অবস্থান পানি নিস্কাশনের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন প্রান্তিক চাষীরা।
বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) সকাল দুপুরে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের চত্ত্বরে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। পরে ঘটনাস্থলে আসেন সাতক্ষীরা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাহমুদুর রহমান। তিনি কৃষকদের এধরণের ক্ষতিতে দু:খ প্রকাশ করে বলেন, বিষয়টি জেলা প্রশাসক অবগত হয়েছেন। দ্রুত সরেজমিনে দেখে তিনি ব্যবস্থা নেবেন। এই আশ^াসে অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার করে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেন অবস্থান কর্মসূচি পালনকারিরা।
এরআগে অবস্থান কর্মসূচিতে তিন গ্রামের কৃষকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন, কলারোয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, সেচ কমিটির সভাপতি আরিজুল ইসলাম, আবদুর রাজ্জাক, নুর ইসলাম, রতœা খাতুন প্রমুখ।
এসময় তারা বলেন, আমরা সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার মুরারীকাটি, কুমারনল ও কাশিয়াডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। কৃষি কাজের উপর নির্ভর করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করি। বিগত ২১বছর যাবত আমাদের বিলটি জলাবদ্ধ থাকায় আমরা অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটিয়েছি। এ পরিস্থিতিতে তিন গ্রামের সমন্বয়ে ধান চাষের জন্য একটি সেচ কমিটি গঠন করি। সেই কমিটির মাধ্যমে বিদ্যুতের শক্তিশালী মিটার ও পাম্প স্থাপন করে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে পানি নিস্কাশন করে ধান চাষের উপযোগী করা হয় বিলটি। চলতি মৌসুসে আড়াই হাজার বিঘা জমিতে ধান চাষ করা হয়েছে। যা ফলনের পর্যায়ে রয়েছে।
এদিকে কলারোয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু জবর দখল করে বিলের মধ্যে একটি মাছের ঘের করে। আমরা বিলে সেচ দিলে তার ঘেরের পানি শুকিয়ে যায়। সম্প্রতি বর্ষার কারণে পানি জমে ধানের ক্ষতি হতে পারে ভেবে উজানের একটি কালভার্টের মুখ আটকিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি সরকারি চাঁন মল্লিকের খাল দিয়ে পানি বেতনা নদীতে নামানোর জন্য একটি শক্তিশালী পাম্পের ব্যবস্থা করি। কিন্তু চেয়ারম্যান লাল্টু তার অবৈধ মৎস্যঘের রক্ষায় ঘেরে পানি ঢোকানোর জন্য খালের মুখ বন্ধ করে কালভাটের মুখটি খুলে দিয়ে আড়াই হাজার বিঘা ধানী ফলন্ত জমিতে পানি ঢুকিয়ে দেয়। ফলে সেখানে সমস্ত ধান পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে প্রায় ২ হাজার প্রান্তিক কৃষক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পথে বসেছে অনেকেই। পরিকল্পিতভাবে একক স্বার্থে ২ হাজার কৃষকের পেটে লাথি মেরেছে। আমরা অবিলম্বে সরেজমিনে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এবিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু বলেন, আমি বৈধভাবে জমির হারি যথাযথ পরিশোধ করে ঘের করি। বিলের পানি বের করার বিষয়ে আমিও একমত। আমার ঘের শেষ না করে অন্যভাবে বিলের পানি বের করা যায়। তবে তাদের উদ্দেশ্য পরিকল্পিতভাবে আমার ঘেরটি নষ্ট করা।