পুঠিয়ায় ১২ বছরে ৭৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারি অনুদান ছাড়া অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোর কোনো উন্নতি হয়নি। কিন্তু ২০০৮ইং সাল হতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে সর্বনি¤œ ৮জন করে শিক্ষক,কর্মচারি নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, গত ২০০৮ সাল হতে এ পর্যন্ত পুঠিয়া-দুর্গাপুর আসনে আ.লীগ সংসদীয় আসন দখল করে রয়েছে। পুঠিয়ায় ১২টি কলেজ, স্কুল ৪৪টি, স্কুল এ- কলেজ ৩টি, কারিগরি কলেজ ৬টি, মাদ্রাসা ১৩টি। গত ১২ বছরে পুঠিয়ার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সর্বনি¤œ ৭জন করে শিক্ষক,কর্মচারি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অতীতে প্রতিটি কলেজে গড়ে ১০ জন করে শিক্ষক,কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কলেজের শিক্ষকদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে,৩০ লাখ হতে সর্বনি¤œ ১০ লাখ টাকা করে। স্কুল, কারিগরি কলেজ, মাদ্রাসা থেকে সর্বনি¤œ ৮ লাখ করে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে পিএসসি আওতায় শিক্ষক নিয়োগ চলে যাওয়ার কারণে,শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটি নিয়োগ দিতে পারচ্ছেন না। এখনো মাঝেমধ্যে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং চতুর্থ শ্রেনির কর্মচারীদের মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে বলে সরকারি দলয়ী নেতাকর্মীরা অভিযোগ তুলেছেন। আগামীতে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং কর্মচারীদের পদ শূন্য হবে। শূন্য পদগুলিতে নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। অতীতের নেতারা প্রতিষ্ঠানে চাকরি দিয়ে ছিল। এলাকার মেধাবী সন্তানদের। এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়া হচ্ছে টাকার মাপকাটি দেখে। গত ১২ বছরে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক,কর্মচারি নিয়োগ হয়েছে। সরকারদলীয় প্রবীন নেতাদের অভিমত, দেশ স্বাধীনের পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এত নিয়োগ বাণিজ্যে হয়নি। পুঠিয়ার একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরেজমিনে দেখা গেছে, তখন যে এলাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন ছিল। ওই এলাকার কিছু শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের উদ্যোগে প্রথমে, প্রতিষ্ঠানের নামে জমি কিনেছেন। তারপর সংশ্লিষ্ট এলাকার কিংবা অন্য এলাকা কিছু চাকরি প্রত্যাশিদের নিকট থেকে সামান্য কিছু টাকা নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের নিকট হতে লামছাম টাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠানের দুই/একটি অবকাঠামো নির্মাণ করে রাখেন। প্রতিষ্ঠানটি সরকারি এমপিওভুক্ত হওয়ার পর। যদি প্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা অবকাঠামো উন্নতি করার চিন্তা করেছেন। সেই প্রতিষ্ঠানগুলি অবকাঠামো উন্নতি হয়েছে। তবে উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারি অনুদান ছাড়া অবকাঠামোর কোনো উন্নতি দেখতে পাওয়া যায়নি। পুঠিয়া সদরের বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ১৯৬৮ সালে স্থাপিত। এখানে তেমন অবকাঠানোর উন্নতি হয়নি। বিদ্যালয়টির ক্লাস কক্ষগুলি এখনো প্রায় টিন সেডের রয়েছে। শিক্ষার্থীরা রোদবৃষ্টি ঝড়ের ভেতর কষ্ট করে লিখাপড়া করছে। কিন্তু এখানে কয়েকটি শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তিদের অভিযোগ, গত এক দশকে পুঠিয়া-দুর্গাপুর আসনে শত শত কোটি টাকা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হতে শিক্ষা বাণিজ্য হয়েছে। বর্তমানে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধান নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, ২০ লাখ হতে ৪০ লাখ টাকার বিনিময়ে। আর চতুর্থ শ্রেনির কর্মচারিদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে সর্বনি¤œ ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লায়লা আখতার জাহান যুগান্তরকে বলেন,মন্ত্রনালয়ের নিদের্শেক্রমে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেওয়া হলে সেখানে আমাকে যেতে হয়। নিয়োগ দেওয়ার সময়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটির কাকে টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিচ্ছেনা কী না এটা আমার দেখার বিষয় না। ওই এলাকার প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটির পরিচালনার ওপর নিয়োগ নির্ভব করে। রাজনৈতিক ভাবে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে।