পরকীয়ার বলি হয়ে মারা গেছেন প্রেমিক। এলাকাবাসীর এমনই অভিযোগের মুখে গত দুইদিন ধরে প্রেমিকার বারান্দায় পড়ে আছে প্রেমিকের লাশ। পরিবারের অভিযোগ তাকে কৌশলে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রেমিকার দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি দাবি করে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানব বন্ধন করেছে এলাকাবাসি। আর এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বাগেরহাটের চিতলমারীতে।
এলাকাবাসির সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার ডুমুরিয়া গ্রামের মৃত অনন্ত ম-লের ছেলে অমূল্য ম-লের সাথে প্রতিবেশি নির্মল বিশ্বাসের স্ত্রী দিপালী ম-লের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সম্পর্কের কারণে দিপালী রানী নির্মলের বাড়িতে নিয়মিত আসা-যাওয়া করে। এ অবস্থায় অমূল্য ম-লের সংসারে শুরু হয় পারিবারিক অশান্তি। বিষয়টি নিয়ে অনেকবার শালিশ-বৈঠক করা হলেও তাদের ফেরানো সম্ভব হয়নি। এ পরিস্থিতিতে গত ৪দিন আগে অমূল্য ম-ল অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রেমিকা দিপালী ম-ল তাকে চিতলমারী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এনে ভর্তি করে। এ সময় তার অবস্থার অবিনতি হলে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় গত ১৪ আগস্ট শনিবার বিকাল ৬ টায় অমূল্য ম-ল মারা যান।
এ মৃত্যুকে ঘিরে এলাকায় শুরু হয় নানা গুঞ্জন। মৃত অমূল্য ম-লের পরিবারের দাবি সম্পত্তির লোভে প্রেমিকা দিপালী তাকে হাসপাতালে বসে কৌশলে হত্যা করেছে। তার লাশ বাড়িতে পৌঁছালে পরিবারের লোক সেটি গ্রহন না করায় গত দুইদিন ধরে প্রেমিকা দিপালীর বারান্দায় পড়ে আছে অমূল্য’র মৃতদেহ। অমুল্য’র মৃত্যুর জন্য দিপালীকে দায়ী করে রোববার সকাল ১১ টায় ডুমুরিয়া এলাকায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে শত শত নারী-পুরুষ মানব বন্ধনে অংশ নেন। এ সময় তারা ঘটনার তদন্তসহ দিপালীর দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবি করেন।
মৃত অমূল ম-লের বোন মালতী গাইন কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, গত ১৫ বছর ধরে অমূল্য’র সাথে দিপালীর পরকীয়ার সম্পর্ক চলে আসছে। এ সম্পর্কের কারণে অমূল্য’র সংসার ভেঙেছে। তাকে তিন বার বিয়ে দেওয়া হয়েছে কিন্তু দিপালীর পরকীয়ার মোহে ডুবে থাকার কারণে সে সংসার বেশিদিন টেকেনি। অমূল্য’র প্রায় ১৫ বিঘা সম্পত্তি রয়েছে। এ সম্পত্তি দিপালী কৌশলে তার নামে পাওয়ার অব এ্যাটর্ণি করে নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন। এ সম্পত্তির জন্য তাকে কৌশলে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি তার।
ডুমুরিয়া গ্রামের গৃহবধূ কাকলী মজুমদার জানান, দিপালী খুবই ভয়ঙ্কর নারী। এর আগে তার পরকীয়ায় বলি হয়ে খিলিগাতী গ্রামের নিতাই ম-লের ছেলে নির্মল ম-ল বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। সে এলাকায় বহু সংসার ভেঙেছে। কেউ তার প্রতিবাদ করলে তাদের ধর্ষণ মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখায়। এতে ভয়ে তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায়না কেউ।
এ বিষয়ে দিপালী ম-লের সাথে কথা বলতে তার বাড়িতে গেলে সাংবাদিকদের দেখে সে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় অনেক অনুরোধের পর তার সাথে কথা হয়। তিনি জানান অমূল্য’র হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে। তার লাশ কেউ গ্রহণ না করায় তার বাড়িতে এনে রেখেছেন। তার কোন সম্পত্তি তিনি পাওয়ার অব এ্যাটর্ণি করে নেননি বলেও জানান তিনি। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হচ্ছে সেটি অস্বীকার করেন তিনি।
এ ব্যাপারে চিতলমারী থানার ওসি এ এইস এম কামরুজ্জামান জানান, অমূল্য ম-ল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে বলে জানতে পেরেছি। তবে এ ব্যপারে থানায় কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।