রাজশাহী বেতারের কণ্ঠশিল্পী রেজাউল করিম রেজার পরিবারকে সেলাই মেশিন নগদ অর্থ ও খাদ্য দিলেন বাঘা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড. লায়েব উদ্দিন লাভলু। সোমবার (১৬ আগষ্ট) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে চেয়ারম্যানের নিজস্ব অর্থায়নে উপজেলা চত্বরে একটি সেলাই মেশিন, নগদ ৫ হাজার টাকা ও ৪০ কেজি চাল তার ছেলে সাগর আহম্মেদের হাতে তুলে দেয়া হয়।
জানা যায়, রেজাউল করিম রেজা বাংলাদেশ বেতার রাজশাহীর তালিকাভুক্ত একজন শিল্পী ছিলেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫২ বছর। তাঁর বাড়ি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার দিঘা বলারবাড়ি গ্রামে। অভাবের তাড়নায় ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। রেজাউল করিম রেজা গ্রামের পথে গান গাইতে গাইতে ভ্যান চালাতেন। কারও কাছে তিনি মানবেন্দ্র, আবার কারও কাছে মান্না দে। তবে অভাবের তাড়নায় তিনি ভ্যান চালাতেন।
রেজাউল করিম রেজার বাবা মৃত আয়েজ উদ্দিন যাত্রার নায়ক ছিলেন। বড়ই বিলাসী জীবন যাপন করতেন। কোনো সঞ্চয় ছিল না তাঁর। ১৩ বছর বয়সে বাবার মৃত্যু হলে পথে বসে যান রেজাউল করিম।
ছোট চার ভাই বোনের হাত ধরে পথে পথে মানুষ হয়েছেন। কিন্তু সুরের সন্ধান যেখানেই পেয়েছেন, ছুটে গেছেন। গলায় তুলে নিয়েছেন। বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে যাত্রা পালায় শিশু শিল্পীর অভিনয় শুরু করেন। বড় হয়ে অভিনয় ছেড়ে দিয়ে যাত্রায় যন্ত্রসংগীত বাজিয়েছেন।
যাত্রা পালার দুর্দিন পড়ে গেলে রেজাউল করিম রিকশা চালাতে শুরু করেন। তাঁর স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে।
উল্লেখ্য, নাটোরের লালপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের নিখিল সরকারের মেয়ের বিবাহ অনুষ্ঠানে বাজনা বাজাতে গিয়েছিলেন রেজাউল করিম রেজা। আগের দিন থেকে তিনি বিয়ের অনুষ্ঠানে মিউজিক করেছেন। শনিবার (১৪ আগষ্ট) দুপুর ১২টার দিকে তাঁর শরীর খারাপ করছে। তিনি একটু ঘুমাবেন। পরে মিউজিক করার সময় তাঁকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। বেলা ৩টার দিকে তাঁদের বাড়ির পাশের আম বাগানের একটি গাছে তাঁর ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়।
পরের দিন নিজ বাড়ি দিঘা কেন্দ্রীয় ঈদগা মাঠে রোববার (১৫ আগষ্ট) আছর নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা মা’য়ের পাশে দাফন করা হয়।