ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে পাঁচবাগ ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েব রমেন্দ্র বিশ্বাসকে ঘুষ ছাড়া ভূমি সেবা না দেওয়ার অভিযোগে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় ভূমি মালিকরা। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তাজুল ইসলাম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাবেরী রায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে এলাকাবাসীকে বিচারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
গত মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) বেলা সাড়ে ৩ টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তারা পাঁচবাগ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে অবস্থিত ভূমি অফিসের ভেতরে নায়েবকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, পাঁচবাগ ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ঘুষ ছাড়া ভূমি সেবা পাওয়া যায় না। নামজারী বা খারিজ করতে ভূমি অফিসে আসা প্রায় প্রত্যেকের কাছ থেকেই অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেন নায়েব। ঘুষ দেওয়ার পরও মাসের-পর-মাস ভূমি অফিসে ঘোরাঘুরি করে নামজারি, খারিজ ও খাজনা পরিশোধ করতে হয়।
নলচিড়া গ্রামের মৃত মিলনের স্ত্রী পান্না খাতুন (৪৫) কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা, চৌকা গ্রামের আঃ সাত্তারের ছেলে জসিম উদ্দিন (৪৫) কাছ থেকে ৮ হাজার টাকা, উত্তরহারিনা গ্রামের সুরুজ মিঞার ছেলে নজরুল ইসলাম (৪২) কাছ থেকে ৪৫ হাজার টাকা ও চরশাঁখচূড়া গ্রামের মৃত আবদুল হামিদের ছেলে মোঃ আবুল কালামের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা, আঃ সালামের ছেলে হুমায়ুন কবির (৪৫) কাছ থেকে ৩৮ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ করে। এনিয়ে স্থানীয় লোকজনের মাঝে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয়। গত মঙ্গলবার সকালে দিঘিরপাড় এলাকার কামরুল ইসলাম ০.৪৮৫০ একর জমির ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করেন। ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ রশিদে ২৮৫ টাকা লেখা থাকলেও তার কাছ থেকে ১৬ হাজার টাকা দাবী করে নায়েব রমেন্দ্র বিশ্বাস। কামরুল ইসলাম বাধ্য হয়ে এই টাকা দেয়। এ সময় উপস্থিত কয়েকজন এর প্রতিবাদ করে। সাব্বির আলিম মন্ডল নামে ফেসবুক আইডি থেকে লাইভ করে। এ ঘটনায় এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করে। আশপাশের ভুক্তভোগী লোকজন এসে নায়েব রমেন্দ্র বিশ্বাসকে অবরুদ্ধ করে রাখে।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তাজুল ইসলাম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাবেরী রায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিচারের আশ্বাস দিয়ে নায়েবকে উদ্ধার করে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তাজুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে অভিযুক্ত রমেন্দ্র বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাকে আপাতত দাায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।