করোনাকালেও বন্ধ হচ্ছে না সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ ভাতা। বরং সরকারি চাকরিজীবীরা বাসা কিংবা অফিস যে কোনো জায়গা থেকেই অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েই প্রশিক্ষণ ভাতা হিসেবে নগদ অর্থ পাবে। তবে স্বাভাবিক সময়ে প্রশিক্ষণ ভাতা হিসেবে যে পরিমাণ টাকা দেয়া হতো, এখন থেকে তার অর্ধেক মিলবে। ইতিমধ্যে সব ধরনের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে যুক্ত প্রশিক্ষক, প্রশিক্ষণার্থী, কোর্স পরিচালকসহ অন্যদের ভাতা ও সম্মানীর নতুন হার নির্ধারণ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট সব দফতরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ চিঠি পাঠিয়েছে। নতুন নিয়মে কোর্স পরিচালক, কোর্স সমন্বয়ক ও সাপোর্ট স্টাফরাও ভাতা হিসাবে অর্ধেক টাকা পাবে। তবে প্রশিক্ষকদের সম্মানীতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে না। বরং তারা আগের মতোই অর্থ পাবে। অর্থ বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, প্রশিক্ষণকালে সরকারি চাকরিজীবীরা এখন থেকে আপ্যায়ন বাবদ কোনো টাকা পাবে না। প্রশিক্ষণার্থীরা এতোদিন দৈনিক ৫০০ টাকা করে দুপুরের খাবার ভাতা এবং দুই বেলা চা-নাশতার ভাতা ৮০ টাকা করে পেয়ে আসছিল। কিন্তু অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রশিক্ষণ নিলে ওই খাবার ভাতা ও চা-নাশতার ভাতা আর দেয়া হবে না বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। তাছাড়া বিগত ২০১৯ সালের ২২ মে যেসব শর্ত উল্লেখ করে প্রশিক্ষণ ভাতা ও সম্মানীর হার নির্ধারণ করা হয়েছিল সেগুলো অপরিবর্তিত থাকবে।
সূত্র জানায়, প্রশিক্ষণ ভাতার বিষয়ে অর্থ বিভাগের করা এবারের নতুন হার অনুযায়ী গ্রেড ৯ থেকে তার ওপরের সরকারি চাকরিজীবী প্রশিক্ষণার্থীরা দৈনিক জনপ্রতি ৩০০ টাকা হারে ভাতা পাবে। যা আগে ছিল ৬০০ টাকা। আর গ্রেড ১০ থেকে তার নিচের পর্যায়ের সব কর্মচারীরা ভাতা পাবে ২৫০ টাকা, যা আগে ছিল ৫০০ টাকা। তাছাড়া ১৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে কোর্স পরিচালকদের ৭৫০ টাকা সম্মানী করা হয়েছে। ১২০০ টাকার পরিবর্তে ৬০০ টাকা করে পাবেন কোর্স সমন্বয়করা আর ৫০০ টাকার পরিবর্তে সাপোর্ট স্টাফরা পাবে ২৫০ টাকা করে। তবে যুগ্ম-সচিব ও উপ-সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সম্মানী ভাতা বদলানো হয়নি। প্রতি ঘণ্টার সেশনে যুগ্ম-সচিব থেকে তার ওপরের পর্যায়ের কর্মচারীরা ২ হাজার ৫০০ টাকা করে এবং উপ-সচিব থেকে তার নিচের পর্যায়ের কর্মচারীরা ২ হাজার টাকা করে যে সম্মানী পেয়ে আসছিল তা বহাল রাখা হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ শুরুর পর থেকেই দেশে অনলাইন সভা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের দিকে ঝোঁকে সরকারি দফতরগুলো। কিন্তু ওসব বৈঠকে সরাসরি যোগ না দিয়েও সরকারি চাকরিজীবীরা ভাতা হিসেবে নগদ টাকা পেয়ে আসছিল। তা নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সমালোচনার মুখে পড়ে বেশ কয়েকটি দফতর।
এদিকে এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, করোনার কারণে ব্যয় কমানোর অংশ হিসেবেই ভাতা ও সম্মানী কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। একই কারণে গত ১ জুলাই সরকারি কর্মচারীদের বিদেশ ভ্রমণ ও গাড়ি কেনায় লাগাম টানতেও পদক্ষেপ নিয়েছে অর্থ বিভাগ।