দুনিয়ার স্বৈরশাসক ও একনায়কের দেশ ব্যতিরেখে গণতান্ত্রিক রাজনীতি ও মত প্রকাশের অধিকার রয়েছে প্রায় দেশে। তবে মিয়ানমার, থাইল্যান্ডসহ আরও অনেক দেশে গণতান্ত্রিক রাজনীতি ও মত প্রকাশ নিয়ে রয়েছে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা। এ ব্যাপারে সৌদি আরবকেও বাদ দেয়া যায় না। সেখানে রয়েছে একনায়কতন্ত্রের আড়ালে রাজতন্ত্রের কুহেলিকা। যা গণতন্ত্রের যাত্রাপথে মহীরূহ হিসেবে পরিগণিত। এক সময় পাকিস্তানের একনায়করা এ নিয়ে বাধা সৃষ্টি করলে দুর্বার গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে তা খান খান ও ভুলন্টিত হয়ে যায়। ৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পূর্বাকাশে উদিত হয় স্বাধীনতার রক্ত¯œাত সূর্যের দীপশিখা।
ফলশ্রুতিতে গণতান্ত্রিক রাজনীতি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা এদেশের ভাবমূর্তিকে সমুজ্জল ও উদভাষিত করে তোলে। দেশের প্রথিতযশা রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও অভিজ্ঞ রাজনীতিকরা মনে করেন বহুদিন ধরে দেশে মূলত কোনো রাজনীতি ও গণতন্ত্রের চর্চা নেই বলেই রাজনীতি নিয়ে ধান ভানতে শিবের গীতের মতো একে অপরের বিরুদ্ধে ধামধারাক্কা ও ভাঙ্গাঢোলের কটকা আওয়াজের মতো আলোচনা, সমালোচনা, তীর্যকতা, গীবত ও চর্বিত চর্বন করে যাচ্ছে। যার ফলে ঢ, ণ, ত যদু, মধু, কদু ও অপাংক্তেয়রা রাজনৈতিক অঙ্গনকে কলুষিত, দিকভ্রান্ত ও হরহামেশা দ্বিধা সংকোচ কুন্ঠবোধ করছেনা। এ নিয়ে সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও সেনাশাসক এরশাদের তালাক প্রাপ্ত স্ত্রী বিদিশা, এরিক ও শাদ এরশাদকে নিয়ে কিছু লেখা অনেকেরই দৃষ্টিতে এসেছে। ইতোপূর্বেও এরশাদের তালাক প্রাপ্ত স্ত্রী বিদিশা, জিনাত, মরিয়ম মমতাজ মেরী ও আরও অনেককে নিয়ে লেখালেখি, আলোচনা, সমালোচনা কম হয়নি।
এ কথা সত্য, সাবেক ফাস্টলেডী রওশন এরশাদ এসব ব্যাপারে যথেষ্ট ধৈর্য্যরে পরিচয় দিয়েছেন। এরশাদের জীবিতকালে এসব নিয়ে তাহাকে খুব একটা লাফালাফি, লম্পঝম্প বা কোনে বিষোদাগার করতে দেখা যায়নি। এরই মধ্যে এরশাদের জীবিতকালে জাতীয় পার্টি কয়েকভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। এরশাদ সি.এম.এইচে গিয়ে নাটক ও অনেক ডিগবাজির পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় মহাজোটে যোগদান করে। ১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের পর মন্ত্রীর মর্যাদায় সরকারের বিশেষ বিদেশ দূত এবং ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে ১৪ দলের শরিক হিসেবে সংসদের বিরোধীদলে আসীন হয়। ২০১৪ এবং ১৮ সালের নির্বাচনের হালহকিকত সবারই জানা বলে এ ব্যাপারে নতুন করে বলার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না।
বর্তমানে এরশাদের ছোট ভাই গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জি.এম কাদের) জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও রওশন এরশাদ (ডেইজী) সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা, শাদ এরশাদ সংসদ সদস্য এবং এরিক এরশাদ প্রতিবন্ধী। এরশাদের মৃত্যুর পর এরশাদের তালাক প্রাপ্ত স্ত্রী বিদিশা অনেক নাটক ও ডিগবাজি করে অবশেষে তার প্রতিবন্ধী ছেলে এরিকের ওপর ভরসা করে বর্তমানে বারীধারাস্থ প্রেসিডেন্ট পার্কের বাসায় আশ্রয় নিয়েছে। এরশাদের তালাক প্রাপ্ত স্ত্রী বিদিশা এখন বিদিশা সিদ্দিক হিসেবেই পরিচিত। অনেকের মতো বিদিশাকে নিয়ে বলার অভিপ্রায় আমার মতো অনেকেরই নেই। এই চ্যাপ্টার অনেক আগেই ক্লোজড হয়ে গেছে। তাই গণমাধ্যমের প্রতিবেদেনের আলোকে কিছু কথা তোলে ধরার আগে বলতে দ্বিধা নেই, ভূঁইফোর সংগঠন ও হাইব্রিড নেতাদের কারণে রাজনীতি এখন অনেকেই করে না। তবে একথা বলা যায়, অনেকেই চুপ করে বসে থাকলেও রাজনীতি পর্যবেক্ষণ (ড়নংবৎাধঃরড়হ) করছে। দিনের পর দিন রাজনীতির এ অচলাবস্থা আরও স্পষ্ট হতে পারে বলে অনেকেরই বদ্ধমূল ধারণা। যে কারণে ১৪ দলীয় মহাজোট ও ২০ দলীয় জোট নিয়ে শংকা প্রকাশ করা হচ্ছে। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের তেমন কোনো রাজনৈতিক কার্যকলাপও দৃষ্টিতে আসে না।
৬, ৭ ও ১৫ জুলাই দুটি জাতীয় দৈনিকে বিদিশা, এরিক ও শাদ এরশাদকে নিয়ে গণমাধ্যমের শিরোনাম ছিল (ক) বিদিশার বিদেশি ব্যাংক একাউন্টে টাকার পাহাড় (খ) সুইস ব্যাংক থেকে অর্থপাচার (গ) দুবাইয়ে এরশাদের ন্যাশনাল ইউনিয়ন ব্যাংকের আবুধাবি শাখা থেকে লন্ডনের ওয়েস্ট মিনিস্টার ব্যাংক, বার্কলেস ব্যাংক ও নেট ওয়েস্ট ব্যাংকে সরিয়ে নেয়া হয় ৩৭ কোটি টাকা। (ঘ) দুই পুত্রের জন্ম একদিনে তবে বাবা দুজন (ঙ) অপর সংবাদটি ছিল এরিককে সামনে নিয়ে সক্রিয় বিদিশা। তাতে দেখা যায়, তিনটি সংবাদে আদ্যোপান্ত, তথ্য ও উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য ও সূত্রে জানা যায়, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এরশাদের সুইস ব্যাংকের একাউন্ট থেকে বিপুল পরিমান অর্থ সরিয়ে নিয়েছে তার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিক। পাচার করা অর্থের পরিমাণ ১০৫ মিলিয়ন ডলার ও ৩০ লাখ দিরহাম। যা বাংলাদেশী মুদ্রায় ৩৭ কোটি ৫৯ লাখ ৬০ টাকা। মধ্যপ্রাচ্যের দুবাই ও সৌদিআরব থেকে লন্ডনে নিজের তিনটি একাউন্টে এই অর্থ সরিয়ে নেয়া হয়। ২০০১ সালের ২২ মে থেকে ২০০২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৭ দফায় এই টাকা সরিয়ে নেয়া হয়। এদিকে এ ঘটনায় অর্থ পাচারের মামলা হলেও তা প্রমাণ করতে পারেনি তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো। অবৈধভাবে অর্জিত দেশী বিদেশী ২১ কোটি টাকার অর্থ গোপন করার অপরাধে ২০০৫ সালের ১৬ জুন মামলা হয় বিদিশার বিরুদ্ধে। কিন্তু প্রায় একযুগ পার হয়ে গেলেও রহস্যজনক কারণে এ মামলার কোনো অগ্রগতি জানা যায়নি।
প্রাপ্ত নথিপত্রে দেখা যায়, গুলশান থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী নূরে আলম ২০০৫ সালের ১৬ জুন গুলশান থানায় বিদিশার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলা নং- ৪০ (৬) ২০০৫ ইং। জানা যায়, এই মামলার তদন্ত পুলিশের এখতিয়ার বহির্ভূত হওয়ায় ২০০৯ সালের দুদককে নির্দেশ দেয় ঢাকার মুখ্যনগর হাকিম আদালত। ১২৯ নং স্মারকে ২০০৯ সালের ২১ জুলাই আদেশের অনুলিপি দুদকে পাঠানো হয়। এরপর থেকে মামলাটির তদন্তের অগ্রগতি আর পাওয়া যায়নি।
প্রতারণার মাধ্যমে এরশাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া এই বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে লন্ডনে আলীশান বাড়ী ও এ্যাপার্টমেন্ট কিনে বিদিশা। এ্যাপার্টমেন্টটি ১১৬ কর্নওয়েল রোডের ৬৬০ পয়েন্ট ওয়েস্ট লন্ডনে অবস্থিত। যার কোড নম্বর এসডব্লিউ ৭, ৪ এক্স এফ। এ্যাপার্টমেন্টটির দাম ১০ লাখ পাউন্ড (১৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা)। আর ২৯ এডিসন কোর্ট হোপস্ট্রিটে কেনে বিলাস বহুল আরেকটি বাড়ি। যার কোড নম্বর এস-ই-১০ ওডিআর। বাড়িটির ক্রয়মূল্য ৬ লাখ পাউন্ড (৮ কোটি ১০ লাখ টাকা)। সূত্রে বিদিশার সম্পদের আরও তথ্য মিলেছে। ২০০০ সালের ৩ অক্টোবর এরশাদের কাছ থেকে প্রেসিডেন্ট পার্কের ২বি২ এ্যাপার্টমেন্ট ক্রয় করে বিদিশা। সাবকাবলা দলিল নম্বর ১১৪২। যার আয়তন ৩ হাজার ৩২১ দশমিক ২৬ বর্গফুট। দলিল মূল্যে উল্লেখ করা হয় ৩২ লাখ টাকা। দলিল করে নেবার ছয় বছরের মাথায় এ্যাপার্টমেন্টটি ৮ কোটি টাকায় বিক্রী করে দেয়া হয়। ২০০২ সালের ১৩ মে আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশনের কাছ থেকে নিকেতনের ১৩২ নম্বর বাড়ীর ৫-এ ফ্ল্যাটটিও ক্রয় করে বিদিশা। যার দলিল মূল্য দেখানো হয় ২৫ লাখ ২৩ হাজার ৫০০ টাকা। অথচ তার আয়কর নথিপত্রে দেখা গেছে ২০০১ ও ২০০২ সালে অর্থ বছরে আয়কর ফাইল খোলে বিদিশা। মিসেস বিদিশা এরশাদ নামে খোলা ফাইলের টিআইএন নম্বর ২৪৭১০১৬৮৭৬। প্রথম বছর আয়কর দেয়া হয় মাত্র ১০০০ টাকা। আয়কর ফাইলেও সম্পদের তথ্য গোপন করা হয়ে থাকে।
জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান এইচ.এম এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিকের দুই পুত্র সন্তানের জন্ম তারিখ ও পিতার পরিচয় নিয়ে বড় ধরণের গোলক ধাঁধা রয়েছে। জন্ম নিবন্ধন সনদে দেখা গেছে দুই পুত্র শাহাতা জারাব এরশাদ (এরিক) এবং এরিক হুইসনের জন্ম ২০০১ সালের ১১ মার্চ। জন্মস্থান ঢাকা। অর্থাৎ দুই সন্তানের জন্ম হয়েছে একই দিন। কিন্তু শাহাতা
জারাব এরশাদ (এরিক) পিতার নাম লেখা হয়েছে এ.এইচ.এম এরশাদ এবং এরিক ওয়েন হুইসনের পিতার নামের ঘরে লেখা আছে পিটার স্টুয়ার্ট হুইসন। দুইপুত্র সন্তানের জন্ম তারিখ একই দিন লেখা থাকায় ধরে নিতে হবে তারা যমজ ভাই। কিন্তু তাদের পিতা দুইজন হওয়ায় বড় ধরণের প্রশ্ন সামনে এসেছে। শুধু তাই নয় জন্ম নিবন্ধনে দুই পুত্রের জন্ম ঢাকায় বলা হলেও বিদিশার বিদেশ সফরের পাসপোর্টের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ওইদিন বিদিশা ছিল সিঙ্গাপুরে। এছাড়া শুধু সন্তান নয়, বিদিশা তার জন্ম তারিখ নিয়েও দুরকম তথ্য দিয়েছে। এদিকে শাহাতা জারাব এরিকের পিতৃ পরিচয় নিয়ে এরকম চাঞ্চল্যকর তথ্য থাকা অবস্থায় প্রেসিডেন্ট পার্কের এরশাদের বাসায় আছে এরিকের সাথে। এইচ.এম এরশাদ ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই মারা যাওয়ার পর ৪ মাসের মাথায় নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট পার্কের বারীধারায় বাসায় ওঠে বিদিশা।
১৪ জুলাই এরশাদের ২য় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বারীধারার প্রেসিডেন্ট পার্কে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে এরিকের প্রস্তাবে আবারও জাতীয় পার্টিতে ভাঙনের সুর দৃশ্যমান হয়েছে। দলটির চেয়ারম্যান জি.এম কাদেরকে বাদ দিয়ে দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত এরশাদের ছোট ছেলে নতুন করে কমিটির প্রস্তাব করে। সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদকে চেয়ারম্যান, এরিকের মা বিদিশা ও ভাই রাওগীর আলমাহি শাদকে (শাদ এরশাদ) কো-চেয়ারম্যান করে এরিক নতুন কমিটির ঘোষণা দেয়। দলের শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতা এরশাদ বিহীন জাতীয় পার্টির কর্তৃত্ব নিয়ে নতুন ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করে থাকে। বর্তমান জাপার চেয়ারম্যান জি.এম কাদেরকে অবৈধ বলে দাবী করে এরিক এরশাদ। দলকে তার কাছ থেকে বাঁচাতে হবে। আমার মা রওশন এরশাদকে পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে, কো-চেয়ারম্যান হিসেবে আরেক মা বিদিশা এরশাদ ও ভাই রাহগীর আলমাহি শাদ ওরফে শাদ এরশাদকে দলের কো-চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করে এরিক এরশাদ। এরিক বলে আমার বাবা যখন অসুস্থ ছিলেন তখন রাতের আঁধারে চাচা জি.এম কাদের বাবাকে জিম্মি করে কেমোফ্ল্যাক্সের মাধ্যমে অবৈধভাবে চাচাকে পার্টির চেয়ারম্যান পদে স্বাক্ষর করিয়েছিলেন। এরিক বলে জাতীয় পার্টি আজ ধ্বংসের মুখে। চাচা জি.এম কাদের অবৈধভাবে দলের চেয়ারম্যান পদটি কেড়ে নিয়েছেন। আমরা তাকে মানি না। এ সময় বিদিশা বলে আমরা এরিক এরশাদের আজকের ঘোষণা মেনে চলব। আমাদের কেউ থামাতে পারবে না। শাদ ও এরিক দুই সন্তানকে সাথে নিয়ে নতুন প্রজন্মের কাছে বার্তা দেব এবং সামনে এগিয়ে চলব। প্রধান অতিথি হিসেবে রওশন এরশাদের নাম থাকলেও অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত ছিলেন না। অনেকে মনে করে এ মুহুর্তে বিদিশাকে নিয়ে যে ধাম ধারাক্কা ভিশন চলছে তাতে জাতীয় পার্টি আরেকবার ভাঙনের সম্মুখীন হল।
বিদিশা ও এরিককে নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে ও একই দিন দুজনের জন্ম বাবা দুজন ও বিদিশার কোটি কোটি টাকার উৎস খতিয়ে দেখার কথা অনেকে মনে করে থাকে। তেমনি বিলম্বে হলেও শাদ এরশাদের জন্ম নিয়ে বিতর্কের অবসান হওয়া উচিত। রাজনীতিতে কে বা কাহারা কখন কিভাবে ক্ষমতায় আসে তা বলা বা মন্তব্য করা যেমন কঠিন তেমনি ডিফিকাল্ট। তেমনি কে কখন ক্ষমতা ছাড়া হয়, আন্দাজ বা অনুমানের ওপর নির্ভর করে মন্তব্য করাও কঠিন। আর যদি আলোচনা, সমালোচনার মধ্যেও রাজনীতিতে বিদিশাদের আগমন ঘটে তবে হয়তো বলার কিছু নাও থাকতে পারে। এক সময় মহাবীর আলেকজান্ডার দা গ্রেট এদেশে পর্যটনে এসে আক্ষেপ করে বলেছিলেন “বিচিত্র এ দেশ, বিচিত্র এ দেশের মানুষ ও তার চেয়ে বিচিত্র এ দেশের মানুষের মন।” যতক্ষণ রাজনীতি থেকে দুর্নীতির অবসান না হবে ততক্ষণ জনমুখী রাজনীতি সত্যের অপলাপ মাত্র। রাজনীতি হোক স্বচ্ছ সুন্দর, জনগণের আশা আকাংখার মূর্ত প্রতীক ও অনির্বান আলোর দিশারী। রাজনীতির মোদ্দা কথা গণমুখী শাসন, আমলা বিমুখ প্রশাসন। জনসেবা, দেশপ্রেম, জাতীয়তবোধ, দুর্নীতিমুক্ত ও দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
পরিশেষে বলব, দেশের নাগরিক হিসেবে সবারই রাজনীতি করার গণতান্ত্রিক বা ডেমোক্রেটিক রাইটস রয়েছে। তবে রাজনৈতিক অঙ্গনকে সুন্দর ও জনমুখী করার লক্ষ্যে কলুসমুক্ত রাজনীতির বিকল্প নেই। রাজনীতিতে দুর্নীতিবাজ, ভূঁইফোড় সংগঠন ও হাইব্রিডদের সম্পর্কে সজাগ থাকলে রাজনৈতিক অঙ্গনকে দোষীত করার আদৌ সুযোগ থাকে না। বিদিশা এরশাদ রাজনীতিতে আসার অধিকার রয়েছে। আসলে আগেভাগেই পরিশুদ্ধ হয়ে আসা উচিত বলে অনেকেই মনে করে। তা না হলে প্রিভিয়ার্স রেকর্ড (Previous record) বা বিদিশাকে নিয়ে ধাম ধারাক্কা ভিশন সামনে চলে আসলে বলার কিছু নাও থাকতে পারে।
এ.কে.এম শামছুল হক রেনু
লেখক কলামিষ্ট