সিটি কর্পোরেশনের নিয়মিত পরিচ্ছন্নতার কাজে বাঁধা প্রদান, বিনা উসকানিতে বিসিসি’র কর্মচারীদের ওপর গুলিবর্ষণের নির্দেশ দেয়া, হামলা, গুলিবর্ষণের মাধ্যমে একাধিক ব্যক্তির অঙ্গহানির অভিযোগ এনে আদালতে দুটি মামলার আবেদন করা হয়েছে।
উভয় মামলায় বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমান, কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি, এসআই ও ইউএনও’র বাসভবনে দায়িত্বরত আনসার সদস্যসহ দুটি মামলায় ছয়জনের নামোল্লেক করে আরও অজ্ঞাতনামা শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
রোববার বেলা এগারোটার দিকে বরিশাল চীফ মেট্রোপলিটন অতিরিক্ত ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মাসুম বিল্লাহ’র আদালতে নালিশী আবেদন করা হয়। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা বাবুল হালদার ও বরিশাল আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বিসিসি’র প্যানেল মেয়র অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন বাদি হয়ে আদালতে মামলা গ্রহন করার জন্য নালিশী আবেদন করেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুস, অ্যাডভোকেট দিলিপ কুমার ঘোষসহ একাধিক আইনজীবীরা বাদী পক্ষের আবেদন গ্রহন করার জন্য শুনানী করেন। শুনানী শেষে বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের পরবর্তী কার্যদিবসে নির্দেশ দেয়ার জন্য রেখে দিয়েছেন।
মামলার বিবরনে বাদী পক্ষের আনা অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ আগস্ট দিবাগত রাতে সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর দাপ্তরিক সিদ্ধান্ত মোতাবেক রাত পৌনে ১০টার দিকে নগরীর ২৩নং ওয়ার্ডের সিএন্ডবি রোডস্থ বিসিসি’র প্রশাসনিক কর্মকর্তার নেতৃত্বে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে থেকে ব্যানার, ফেস্টুন অপসারনকালীন ১নং আসামি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাদের কাজে বাঁধা প্রধান করে। এরপরও বিসিসি’র পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ব্যানার ফেস্টুন সরানো চেষ্টা করলে নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে আনসার সদস্যরা পরিচ্ছন্ন কর্মীদের মারধর করে। এ সময় মামলার ১নং স্বাক্ষী বিসিসি’র প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস বিষয়টি মেয়রকে অবহিত করার পর তিনি (মেয়র) ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিজের পরিচয় প্রদান করে। মেয়রের পরিচয় পাওয়ার সাথে সাথে তাহার উপড় চড়াও হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মেয়রকে গুলি করার জন্য ইউএনও আনসার সদস্যদের নির্দেশ দেন।
এরপর পরই নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমানের সাথে থাকা আনসার সদস্যরা মেয়রকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষন করে। এ সময় মেয়রকে মানবপ্রাচীর গড়ে তুলে তাকে গাড়িতে উঠিয়ে দেয়া হয়েছে। অপরদিকে আনসারের গুলিতে বিসিসি’র অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা আহত হয়।
একপর্যায়ে মেয়র গুলিবিদ্ধ হওয়ার সংবাদ ছড়িয়ে পরলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীরা জড়ো হলে কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশ এসে নির্বিচারে লাঠিচার্জ করে নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। গুলি ও লাঠিচার্জে অসংখ্য নেতাকর্মীরা আহত হয়েছেন।
একই ঘটনা উল্লেখ করে বিসিসি’র প্যানেল মেয়র ও আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন বাদী হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমান ও কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি নুরুল ইসলাম, থানার উপপরিদর্শক মোঃ শাহ জালাল মল্লিক ও নির্বাহী অফিসারের দেহরক্ষী পাঁচজন আনসার সদস্যসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪০/৫০ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা গ্রহন করার জন্য নালিশী আবেদন করেন।