রংপুর বিভাগে একদিনের ব্যবধানে করোনায় মৃত্যু ও শনাক্ত দুটোই বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরও আটজন প্রাণ হারিয়েছেন। নতুন করে ১৮৬ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এ নিয়ে ২২ দিনে বিভাগের আট জেলায় করোনায় ২৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। গড় হিসেবে প্রতিদিন বিভাগে প্রাণহানি হয়েছে ১০ জনেরও বেশি লোকের। এর আগে শনিবার (২১ আগস্ট) বিভাগে করোনায় সাতজনের মৃত্যু হয়। করোনা শনাক্ত হয় ১১৪ জনের।
রোববার (২২ আগস্ট) দুপুরে রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. মোতাহারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, রোববার সকাল আটটা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় নতুন মৃতদের মধ্যে রংপুরের দুইজন জন, ঠাকুরগাঁওয়ের দুই, দিনাজপুরের দুইজনসহ গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলার একজন করে রয়েছেন।
২৪ ঘণ্টায় বিভাগজুড়ে ১ হাজার ২২৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে দিনাজপুরের ৪৩, ঠাকুরগাঁওয়ের ৩৮, রংপুরের ৩১ জন, পঞ্চগড়ের ১৮, নীলফামারীর ১৮, লালমনিরহাট ১৪, গাইবান্ধার ১৩ ও কুড়িগ্রাম জেলার ১১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ১৬ শতাংশ।
সর্বশেষ আটজনসহ রংপুর বিভাগে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১ হাজার ১৫১ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে আছে দিনাজপুর। এ জেলায় সর্বোচ্চ ৩১৩ জন মারা গেছেন।
আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে বিভাগীয় জেলা রংপুরে। জেলা হিসেবে সবচেয়ে কম ৫৯ জন মারা গেছেন লালমনিরহাটে। এ ছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ের ২৩১ জন, নীলফামারীর ৮১, পঞ্চগড়ের ৭৩, কুড়িগ্রামের ৬৪ ও গাইবান্ধার ৬০ জন মারা গেছেন।
গত বছরের মার্চে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত বিভাগে মোট ২ লাখ ৪৬ হাজার ৪৮৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫১ হাজার ৭৪৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত বিভাগে ৪৪ হাজার ১৩৮ জন সুস্থ হয়েছেন।
এদিকে যতই দিন যাচ্ছে শহর-গ্রামে স্বাস্থ্যবিধি মানছে না মানুষ। এতে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি। হাটবাজার থেকে গণপরিবহন, অফিস-আদালত, সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কোথাও নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। বিভাগের হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগী ভর্তির চাপ কমে এসেছে।
করোনার টিকা গ্রহণ প্রক্রিয়া সহজ হওয়াতে সাধারণ মানুষের মধ্যে বেড়েছে সচেতনতা। এখন পর্যন্ত (শনিবার) বিভাগের আট জেলায় ২৩ লাখ ৬৪ হাজারের বেশি নারী-পুরুষ টিকা নিয়েছেন। এরমধ্যে করোনা ভ্যাকসিন কোভিশিল্ডের ডোজ ১০ লাখ ৮৬ হাজার ২৩৮ জন ও সিনোফার্মা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৮ জন এবং মর্ডানা টিকার ১৪ হাজার ৯৩২ জন টিকার ডোজ নিয়েছেন। বর্তমানে আঠারো বছর বয়সের ঊর্ধ্বে সকলেই করোনার টিকা গ্রহণ করতে পারবেন।
করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. মোতাহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে।