পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে অস্বচ্ছতা ও বিতর্ক এর অবসান ঘটিয়ে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় এ নিয়োগ সম্পন্ন করার জন্য ১৩টি পদক্ষেপ নিয়েছে জেলা পুলিশ। ফরিদপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথ্য তুলে ধরেন পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান(বিপিএম)।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের মিলনায়তনে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সংবাদ সম্মেলনে জেলার পাশাপাশি বিভিন, উপেজেলার সংবাদকর্মীরা অংশ নেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন পুলিশ সুপার। তাতে বলা হয়, পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করার জন্য জেলার বিভিন্ন গুরুত্ব¡পুর্ন স্থানে ডিজিটাল ডিভাইস এবং স্থানীয় কেবল অপারেটরের মাধ্যমে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের নতুন পদ্ধতি ও তথ্য প্রচার করা হবে। এ সংক্রান্তে জেলা পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনা, থানা, ফাঁড়ি ও তদন্ত কেন্দ্রের মাধ্যমে এবং অন্যান্য প্রচার মাধ্যম ব্যবহার করে এ ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি করা হবে। কোন দালাল কিংবা প্রতারক চক্র যাতে চাকুরী প্রার্থীদের নিকট হতে প্রতারণা করে চাকুরী পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিতে না পারে, সেজন্য জেলা পুলিশ কঠোর মনিটরিং এর ব্যবস্থা করবে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দালাল প্রতারক কিংবা অসদুপায় অবলম্বনকারী চক্রের বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহ পূর্বক কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দালাল, প্রতারক, অসদুপায় অবলম্বনকারীসহ তদবীরবাজ কিংবা অন্য যে কেউ যাতে চাকুরী প্রার্থীদের প্রতারিত করতে না পারে সেজন্য জেলা পুলিশের একাধিক টিমসহ গোয়েন্দা টিম সার্বক্ষনিক তথ্য সংগ্রহ ও মনিটরিং এর দায়ীত্বে থাকবেন। প্রতারকদের বিরুদ্ধে তথ্য পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। চাকুরী প্রার্থীদের পরিবারের অস্বাভাবিক ব্যাংক লেনদেন, জমিজমা ও মূল্যবান সম্পদ বিক্রয়, অর্থ লেনদেন ও ধারকর্জ করা থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো। অনেক অভিভাবক চাকুরী প্রার্থীদের সাথে মেয়েকে বিবাহ বন্ধনের প্রতিশ্রুতিতে যৌতুক হিসেবে টাকাপয়সা প্রদান করে থাকেন যা প্রচলিত আইনে দন্ডনীয় অপরাধ। এই বিষয়টি পুলিশী নজরদারির মধ্যে রাখা হবে। কোন চাকুরী প্রত্যাশী কারো মাধ্যমে তদবীর কিংবা অসাধু পন্থা অবলম্বন করলে সঙ্গে সঙ্গে ঐ প্রার্থীকে অযোগ্য বলে বিবেচনা করা হবে এবং চাকুরীর নিয়োগের যে কোন পর্যায়ে দুর্নীতি প্রমাণিত হলে তার নিয়োগ বাতিল করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে সকল ধরণের অনৈতিক লেনদেন এবং অবৈধ তদবীর বন্ধের জন্য ফরিদপুর জেলা পুলিশের পক্ষ হতে বিট পুলিশিং, কমিউনিটি পুলিশিং, উঠান বৈঠক, অপরাধ দমন সভা, মসজিদ, মন্দির প্রভৃতি সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালানো হবে। পুলিশ নিয়োগ সংক্রান্তে কোথাও কোন অনৈতিক লেনদেন অথবা কোন অবৈধ পন্থা গ্রহনের ঘটনার তথ্য কেউ পুলিশকে প্রদান করলে তাকে পুলিশের পক্ষ হতে পুরস্কৃত করা হবে এবং তথ্য দাতার নাম পরিচয় গোপন রাখা হবে। পুলিশ নিয়োগ সংক্রান্তে অবৈধ লেনদেন কিংবা প্রতারক চক্রকে ধরার জন্য জেলা পুলিশের বিশেষ টিম সাদা পোশাকে জেলার বিভিন্ন স্থানে নজরদারি করবে। পুলিশ নিয়োগ সংক্রান্তে যে কোন ধরনের অসাধু তৎপরতাকে প্রতিহত করার জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা নেয়া হবে এবং প্রযুক্তিগত মনিটরিং করা হবে। জেলা পুলিশের তালিকাভূক্ত তদবীরবাজ/দালালদের গোয়েন্দা নজরদারির মধ্যে এনে তাদের গতিবিধি নিবিড়ভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে।
বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার মো.আলিমুজ্জামান(বিপিএম) বলেন, পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ করা হবে সম্পূর্ণ সচ্ছতার ভিত্তিতে। এখানেকার ও কোন সুপারিশ কাজ করবেনা। তিনি এ স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া সফল করার জন্য সংবাদ কর্মীদের সাহায্য কামনা করেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো.তরিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গাসার্কেল) ফাহিমা কাদের চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেডকোয়াটার হেলাল উদ্দিন, ডিবি পুলিশের ওসি সুণীল কর্মকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।