নীলফামারীর সৈয়দপুরে রেল লাইন ঘেষে গড়ে উঠছে অবৈধ পিকআপ স্ট্যান্ড। একই সঙ্গে রেল লাইনের দু’পাশে প্রায় তিন কিলোমিটার জুড়ে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা। এতে করে অহরহ ঘটছে প্রাণহানির ঘটনা। বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে ডুয়েল গেজ রেল লাইন স্থাপনের কাজ। রাজশাহীর আব্দুল্লাহপুর থেকে নীলফামারীর চিলাহাটীর স্থলবন্দর পর্যন্ত ডুয়েল গেজ রেল লাইন বসানোর মহাপরিকল্পনা ২০১৭ সালে হাতে নেন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অবৈধ স্থাপনাই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কর্তৃপক্ষ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গিয়ে বারবার বাঁধার সম্মখিন হন। মামলা করেও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করতে পারছে না। গত কয়েক বছরে কমপক্ষে ৩’শ মামলা করেছে রেলওয়ের ভূমি বিভাগ বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। বর্তমানে রেলওয়ের জমি দখলে চলছে বিদ্যুৎগতির প্রতিযোগিতা। দখলবাজরা পারলে রেল লাইনসহ দখলে নিতে তৎপর। এক্ষেত্রে বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে ট্রেন চলাচল। জবরদখলের অংশ হিসেবে সৈয়দপুর শহরের ১নং রেল ঘুমটি এলাকায় ফল মার্কেটকে ঘিরে রেল লাইন ঘেষে গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ পিকআপ স্ট্যান্ড। এ পিকআপ স্ট্যান্ডটি নিয়ন্ত্রন করে নীলফামারী জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের পিকআপ, মাইক্রো, কার শ্রমিক ইউনিয়নের উপ-কমিটি। এই সংগঠনটি সরকারি দলের সমর্থক। কথা হয় ওই উপ-কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. মানিক মিয়ার সঙ্গে। তিনি ভোরের কাগজকে বলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিনের সঙ্গে কথা বলে সেখানে পিকআপ স্ট্যান্ড করা হয়েছে। এ কথার সত্যতা জানতে কথা বলা হয় ওই উপজেলা চেয়ারম্যান ও আ.লীগ সভাপতির সঙ্গে। তিনি পরিষ্কার বলে দেন এ বিষয়ে তার সাথে কারো কথা হয়নি। অবৈধ স্ট্যান্ডের কারণে সেখানে যে দুর্ঘটনা ঘটবে তা মেনে নেয়ার প্রশ্নই আসে না। আর আমি কোন ধরনের অবৈধ কর্মকান্ডকে প্রশ্রয় দেইনা। এদিকে চিলাহাটি টু রাজশাহী ও চিলাহাটি টু খুলনা সৈয়দপুর হয়ে প্রতিদিন ৮ জোড়া ট্রেন চলাচল করে। গত ১ আগস্ট হতে ভারতের হলদি বাড়ি থেকে চিলাহাটি হয়ে বাংলাদেশে ভারতের মালবাহী ট্রেন যাতায়াত শুরু করেছে। এসব ট্রেন সৈয়দপুর হয়েই খুলনা রাজশাহী যাতায়াত করে। ফলে বর্তমানে পূর্বের তুলনায় ট্রেনের সংখ্যা বেড়ে গেছে। সরকারের প্রক্রিয়াধীন চিলাহাটি স্থলবন্দর পুরোদমে চালু হলে ট্রেনের সংখ্যা আরও বাড়বে। এ বছরের নভেম্বরের মধ্যে ঢাকা-চিলাহাটি হয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন যাতায়াত করবে ভারতে। এজন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ট্রেনের সিডিউল ও সেবা বাড়াতে ডুয়েল গেজ রেল লাইন বসাতে বদ্ধ পরিকর। কিন্তু বাধা হয়ে দাড়িয়েছে অবৈধ দখলদার।
রেলওয়ের ভূমি অবৈধ দখলে যাচ্ছে বিষয়ে জানতে কথা হয় রেলওয়ের ভূ-সম্পদ বিভাগের কানুনগো জিয়াউল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে শিগগির কাজ শুরু করা হবে। রেল ভূমি অবৈধভাবে দখলে নিয়ে অবৈধ পিকআপ স্ট্যান্ড গড়ে তোলা বিষয়ে জানতে কথা হয় সহকারি নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিবের সঙ্গে। তিনি বলেন সময়মত অবৈধ সকল স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।