এ যেন ‘রক্ষক হয়ে ভক্ষক’। বন বিভাগের গুরু দায়িত্ব পালন করছেন তিনি কিন্তু বনের গাছ পাচারের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এ ঘটানার তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসি। আর এসব অভিযোগ উঠছে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার বন বিভাগের দায়িত্বে থাকা বন কর্মকর্তা চিন্ময় মধুর বিরুদ্ধে। চিন্ময় মধু বাগেরহাট জেলার ৯ উপজেলা ও খুলনার ৫ উপজেলাসহ ১৪টি উপজেলার বন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত ২৪ আগস্ট মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলা বন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে দুটি ভ্যানযোগে বড় সাইজের ৮পিস শিশুকাঠের গুঁড়ি উপজেলা মোড়ে একটি করাতকলে চেরাইয়ের জন্য আনা হয়। এ সময় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অশোক কুমার বড়াল ওই গাছের সম্পর্কে জানতে চান। এ সময় ভ্যান চালক জানান, বন কর্মকর্তা চিন্ময় মধু তাদের গাছ নিয়ে করাতকলে রাখতে বলেছেন। তখন তাদের কথায় সন্দেহ হলে গাছ গুলো তিনি আটকে দেন। এর আগেও তার বিরুদ্ধে সরকারী গাছ নামমাত্র মূল্যে টে-ারের মাধ্যমে নিজের ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছিল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার অনেকে জানান, বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার চরডাকাতিয়া গ্রামের স্কুল শিক্ষক হরিদাস মধুর ছেলে বন কর্মকর্তা চিন্ময় মধু মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে কোটিপতে বনে গেছেন। কোটি টাকা মূল্যের আলিশান বাড়ি করেছেন। তার বিলাসবহুল বাড়ি নিয়েও প্রশ্ন অনেকের। কিভাবে রাতা-রাতি এত টাকার মালিক হলেন সে প্রশ্ন এখন অনেকের।
এ ব্যাপারে বন কর্মকর্তা চিন্ময় মধু গাছ পাচারের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিন বছর আগে ওই গাছ তিনি টেন্ডারের মাধ্যমে ক্রয় করেছেন। ওই গাছ চিতলমারী বন বিভাগ অফিসের সামনে ছিল। এ গাছ দিয়ে ফার্ণিচার তৈরি করা হবে। এ সময় তিনি টেন্ডারের মাধ্যমে গাছ ক্রয়ের কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অশোক কুমার বড়াল বলেন, কয়েকজন ব্যক্তি ভ্যানযোগে সন্দেহজনক ভাবে উপজেলা পরিষদের মধ্য থেকে ৮ পিচ গাছ পার্শবর্তী করাতকলে নিয়ে যাওয়ার সময় আমার নজরে আসে। বিষয়টি ভ্যান চালকদের জিজ্ঞাসা করলে তারা বন কর্মকর্তা চিন্ময় মধুর কথা বলেন। চিন্ময় মধু গাছ গুলো অবৈধভাবে পাচার করছিল বলে সন্দেহ হওয়ায় সে গুলো মিলে না নিয়ে রাস্তার পাশে রাখতে বলা হয়।
বাগেরহাট জেলা বন বিভাগের ডিএফও মোঃ আবদুর রহমান বলেন, বন কর্মকর্তা হিসেবে তার টেন্ডার ক্রয় করার কোন নিয়ম নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ লিটন আলী বলেন, গাছের বিষয়টি শুনে বন কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছি। তিনি বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।