রংপুর বিভাগে করোনায় মৃত্যু ও শনাক্ত কমে এসেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে করোনা আক্রান্ত আরও সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে ১০৭ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) বিভাগে করোনায় ছয়জনের মৃত্যু হয়। করোনা শনাক্ত হয় ১৩৯ জনের।
এ নিয়ে গেল ২৫ দিনে বিভাগে করোনায় ২৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। গড় হিসাবে প্রতিদিন বিভাগে ১০ জনেরও বেশি লোকের প্রাণহানি হয়েছে। তবে দিন দিন মৃত্যু ও শনাক্তের তুলনায় সুস্থতার সংখ্যা বাড়ছে।
বুধবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. মোতাহারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নতুন মৃতদের মধ্যে ঠাকুরগাঁওয়ের তিনজন, রংপুরের দুই ও লালমনিরহাট জেলার দুইজন রয়েছেন।
২৪ ঘণ্টায় বিভাগজুড়ে ৮৯১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১০৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ঠাকুরগাঁওয়ের ২৫ জন, দিনাজপুরের ২৫, রংপুরের ২২, নীলফামারীর ১০, কুড়িগ্রামের ৮, গাইবান্ধার ৭, পঞ্চগড়ের ৫ ও লালমনিরহাট জেলার ৫ জন রয়েছেন। শনাক্তের হার ১২ দশমিক ০১ শতাংশ।
সর্বশেষ সাতজনসহ রংপুর বিভাগে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১ হাজার ১৭২ জনে। এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে আছে দিনাজপুর। এ জেলায় সর্বোচ্চ ৩১৬ জন মারা গেছেন। আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বিভাগীয় জেলা রংপুরে। জেলা হিসেবে সবচেয়ে কম ৬২ জন মারা গেছেন লালমনিরহাটে। এ ছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ে ২৩৫, নীলফামারীতে ৮৫, পঞ্চগড়ে ৭৪, কুড়িগ্রামে ৬৫ ও গাইবান্ধায় ৬১ জন মারা গেছেন।
গত বছরের মার্চে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত বিভাগে মোট ২ লাখ ৫০ হাজার ৩১০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫২ হাজার ২১৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত বিভাগে সুস্থ হয়েছেন ৪৫ হাজার ৬৩৫ জন।
এদিকে যতই দিন যাচ্ছে শহরে-গ্রামে লঙ্ঘিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। সঙ্গে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ ঝুঁকি। হাটবাজার থেকে গণপরিবহন কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগীর চাপ কমেছে। তবে করোনার উপসর্গ নিয়ে প্রতিদিন তিন-চারজনের মৃত্যু হলেও তা হিসেবে ধরছে না স্বাস্থ্যবিভাগ।
এদিকে করোনার টিকা গ্রহণ-প্রক্রিয়া সহজ হওয়ায় রংপুর বিভাগে সাধারণ মানুষের মধ্যে বেড়েছে সচেতনতা। এখন পর্যন্ত (মঙ্গলবার) বিভাগের আট জেলায় ২৪ লাখ ৭৩ হাজার ৭৩৭ জন নারী-পুরুষ টিকা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে করোনা ভ্যাকসিন কোভিশিল্ডের ডোজ ১১ লাখ ৫ হাজার ৬৩৯ জন ও সিনোফার্মা ১২ লাখ ২১ হাজার ১২৬ জন এবং মডার্নার ১ লাখ ৪৬ হাজার ৯৭২ জন টিকা নিয়েছেন। বর্তমানে আঠারো-ঊর্ধ্ব সবাই করোনার টিকা গ্রহণ করতে পারবেন।
করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. মোতাহারুল ইসলাম বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই। তবে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি বিভাগের মানুষের জন্য ভালো সংবাদ। সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনা মোকাবিলা করতে হবে।