লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে মেঘনা নদীর তীর রক্ষাবাঁধ সেনাবাহিনী দিয়ে বাস্তবায়ন করার দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচি পন্ড করে দিয়েছে ছাত্রলীগ কর্মীরা। বুধবার দুপুরে উপজেলা সদর আলেকজান্ডার বাজারের রহমানিয়া মার্কেটের সামনে প্রধান সড়কে এ ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশ ছাত্র-যুব অধিকার পরিষদ রামগতি-কমলনগর উপজেলা শাখা ওই মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে। এতে এলাকার সাধারণ মানুষ ও বাজারের ব্যবসায়ীরা অংশ নেন।
প্রত্যক্ষদর্শী মানববন্ধনে অংশগ্রহনকারী এবং বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, আলেকজান্ডার বাজারের রহমানিয়া মার্কেটের সামনে প্রধান সড়কে মেঘনা নদীর তীর রক্ষাবাঁধ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়ন করার দাবিতে বাজারের ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণে মানববন্ধন কর্মসূচি চলছিল। এসময় পাঁচ থেকে সাতজন ছাত্রলীগকর্মী মানববন্ধনে এসে বাধা দেয়। একপর্যায়ে তারা আয়োজকদের মারধর করে ব্যানার কেঁড়ে নিয়ে যায়।
বাংলাদেশ ছাত্র-যুব অধিকার পরিষদ রামগতি-কমলনগর উপজেলা শাখার যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. হাসান জানান, ছাত্র-যুব অধিকার পরিষদের আহ্বানে বাজারের ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচি চলছিল। এ সময় সাজ্জাদুর রহমান সৈকতের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ কর্মীরা মানববন্ধনে বাধা দেয়। একপর্যায়ে তারা মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী ছাত্র পরিষদের কর্মীদের ওপর হামলা চালায় এবং তাদের মারধর করে টিশার্ট ছিড়ে ফেলে ও ব্যানার কেঁড়ে নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য ছাত্রলীগকর্মী সাজ্জাদুর রহমান সৈকতের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আকবর হোসেন সুখী বলেন, মেঘনা নদীর তীর রক্ষাবাঁধ সেনাবাহিনী দিয়ে বাস্তবায়ন করার দাবি কোনো একক দলের নয়। এই দাবি রামগতি উপজেলার সর্বস্তরের মানুষের। ছাত্র-যুব অধিকার পরিষদের মানববন্ধন কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের কর্মীরা হামলা বা মারধর করেনি। একক একটি দলের ব্যানারে ওই কর্মসূরি আয়োজন করায় ছাত্র-যুব অধিকার পরিষদের কর্মীদের সাথে ছাত্রলীগ কর্মীদের বাগবিত-া হয়েছে; সেটা পরবর্তীতে সমাধান হয়ে গেছে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রামগতি-কমলনগর নদীর তীর রক্ষাবাঁধ সেনাবাহিনী দিয়ে বাস্তবায়ন করার দাবিতে বাংলাদেশ ছাত্র-যুব অধিকার পরিষদ রামগতি-কমলনগর উপজেলা শাখার আয়োজনে একটি মানববন্ধন কর্মসূচি চলছিল। আকস্মিক কয়েকজন তরুণ ওই মানবন্ধনে বাধা দিয়ে ব্যানার ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং অংশগ্রহণকারীদের সাথে কথা কাটা-কাটি করছে।
রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোলাইমান জানান, নদীর তীর রক্ষাবাঁধ সেনাবাহিনী দিয়ে বাস্তবায়ন করার দাবিতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ কর্মীরা বাধা দেওয়ার কথা তিনি শুনেছেন। তবে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, মেঘনা নদীর ভয়াবহ ভাঙনরোধে ‘রামগতি ও কমলনগর উপজেলাধীন বড়খেরী ও লুধুয়া বাজার এবং কাদিরপ-িতের হাট এলাকা ভাঙন হতে রক্ষাকল্পে মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প সম্প্রতি একনেকে অনুমোদন হয়। তিন হাজার ৮৯ কোটি ৯৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকার ওই প্রকল্পটি সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়নের জন্য এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু সম্প্রতি প্রকল্পটি ঠিকাদারের মাধ্যমে বাস্তবায়নের জন্য দরপত্র আহ্বান করায় এলাকাবাসী সেনাবাহিনী দিয়ে কাজ করার দাবিতে মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন।