পুঠিয়ায় ৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগি রোগিরা বলছেন, হাসপাতালে চিকিৎসকরা প্রতিদিন রোগিদের লাইনে দাঁড় করিয়ে রেখে। তারা বিভিন্ন ক্লিনিকে রোগিদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য ছুটছে। অনেক রোগিরা চিকিৎসকদের জন্য র্দীঘক্ষণ অপেক্ষা করার পর হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছে। রোগিদের ভেতর অনেকে আবার কাক্সিক্ষত চিকিৎসক নিকট চিকিৎসা করার জন্য কোনো ক্লিনিকে টাকা দিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছেন। বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলার পর কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। উপজেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সাপ্তাহিক ছুটি বাদে চিকিৎসকরা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২:৩০ মিনিট পর্যন্ত বর্হিবিভাগে আসা রোগিদের চিকিৎসা সেবা দেবেন। আর জরুরি বিভাগে সহকারী চিকিৎসকদের সঙ্গে সার্বক্ষনিক একজন এমবিবিএস চিকিৎসক থাকবেন। আর একজন আবাসিক চিকিৎসক হাসপাতালের ওয়ার্ডে সার্বক্ষনিক থাকবেন। এই নিয়ম খাতাকলমে রয়েছে। চিকিৎসকরা কেউ সময় মতো হাসপাতালে আসেন না। উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মৌসুমি রহমান বলেন, সরকারী নিয়নুযায়ী চিকিৎসকরা কেউ এই হাসপাতালে সঠিক দায়িত্ব পালন করছেন না। আমি রোগিদের অভিযোগের ভির্ত্তিতে ২২ আগস্ট হাসপাতালে গিয়ে তার সত্যতা পেয়েছি। তারা দুপুর ১২টার আগেই স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে রোগি দেখতে চলে যান। একজন গাইনী চিকিৎসক সকাল ১১টার দিকে স্থানীয় রায়হানা ক্লিনিকে পাওয়া গেছে। ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, সে সময় রোগি সেজে আমি ওই চিকিৎসকের রীতিমতো টাকা দিয়ে চিকিৎসা করায়ে এসেছি। এবং আমি তাকে প্রশ্ন করি, হাসপাতালের অফিস সময়ে কোনো প্রাইভেটে ক্লিনিকে রোগি দেখছেন। এই কথা বলাতে তিনি আমার সঙ্গে খারাপ আচারণ করেন। বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। গত মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা মিনারা বেগম বলেন,করোনাভাইরাসের আতঙ্কের জন্য ডাক্তারা ভালো করে রোগিদের দেখেন না। হাসপাতালে চিকিৎসকরা প্রতিদিন রোগিদের লাইনে দাঁড় করিয়ে রেখে ক্লিনিকে চলে যান। এরপর এক থেকে দেড় ঘন্টা পর তারা হাসপাতালে ফিরে আসেন। আবদুল সালাম নামে ভুক্তভোগি রোগি বলেন, প্রতিদিন হাসপাতালে শতশত রোগির লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন। ডাক্তারা রোগিদের বিবরণ ঠিকমত না শুনে একটা প্রেসক্রিপশন লিখে ধরিয়ে দেন। আর কোনো রোগি বিস্তারিত বলতে চাইলে ওই কক্ষে দাঁড়িয়ে থাকা আউটসোর্সের কর্মচারিরা বলেন ভালো করে দেখাতে চাইলে স্যারের চেম্বারে যেতে হবে। এরপর একটি প্রাইভেট চেম্বারের ঠিকানা দিয়ে দেন। হাসপাতালে রোগি সংগ্রহ করতে আসা একটি ক্লিনিকের কর্মচারী বলেন, উপজেলা সদরে ১০টি প্রাইভেট ক্লিনিক রয়েছে। আর ওই ক্লিনিকের মালিকরা ডাক্তাদের যখন ডাকেন তারা তৎক্ষনিক ছুটে যান। তবে সে সময় হাসপাতালে আসা কোনো রোগির আর্জেন্ট হলে তারা ডাক্তারে ওই চেম্বারে চলে যায়। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আবদুর মতিন বলেন, হাসপাতালে রোগিদের রেখে চিকিৎসকরা ক্লিনিকে অবস্থান করেন,এমন অভিযোগ আমি পেয়েছি। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ওই চিকিৎসকদের নোটিশ করা হয়েছে।