নৌকা ডুবে নিখোঁজের ৭ দিন পরও সন্ধান মিলছে না সরাইলের রহিম মিয়ার (৫০)। প্রথম দিকে ছেলেকে জীবিত পাওয়ার আশায় ছিলেন গর্ভধারনী মা। সম্প্রতি নিরাশ। ছেলের জন্য কাঁদছেন দিনরাত। পুত্র শোকের দখল সামলাতে পারছেন না সাফিয়া বেগম (৬৫)। গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে ছেলের নাম বলতে বলতে হৃদরোগে মারা যান তিনি। বিদায় বেলায় ছেলের লাশটিও দেখে যেতে পারলেন না সাফিয়া বেগম। শুক্রবার বিকাল ৪টায় জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে ওঁর লাশ দাফন করা হয়েছে। নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার অরূয়াইল ইউনিয়নের রানীদিয়া গ্রামের হাজী লায়েছ মিয়ার ছেলে রহিম। চার ভাই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। আগামী ইউপি নির্বাচনে রহিম অরূয়াইল ইউনিয়নের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী ছিলেন। ঢাকার হাজী মিঠু মিয়ার ‘নিয়ামত শুকরিয়া-১’ নামের স্টিলবডি নৌকাটি ভাড়ায় চালাতেন রহিম মিয়াসহ ৪ জন কর্মী।
গত ২০ আগস্ট শুক্রবার দিবাগত রাতে বরিশাল জেলার হিজলা এলাকার মেঘনা নদীতে নৌকা ডুবে নিখোঁজ হন রহিম মিয়া। স্পীডবোট ও ডুবুরি নিয়ে ৩ কিলোমিটার এলাকায় খুঁজেছেন তার স্বজনরা। শুক্রবার এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিখোঁজ রহিমের সন্ধান মিলেনি। রহিমের স্বজনরা জানায়, হিজলা এলাকায় মেঘনা নদীর পাড়ে রাত্রি যাপনের জন্য নোঙ্গর করেছিল তাদের নৌকাটি। গাছের সাথে বাঁধা নৌকাটির সাথে ধাক্কা লাগে একটি মালবাহী কার্গো নৌকার। প্রবল ¯্রােতের তোড়ে রহিম মিয়ার নৌকাটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পানিতে ডুবে যায়। এরপর থেকেই নিখোঁজ রয়েছেন রহিম মিয়া। সেখানকার থানা পুলিশ ঘটনার পর থেকেই চেষ্টা করছেন। ৩ কিলোমিটার এলাকায় করা হয়েছে মাইকিং। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও উদ্ধার তৎপরতা চালিয়েছেন। কাজ হয়নি। যতই দিন যাচ্ছে পরিবারে কান্নার শব্দ ততই বড় হচ্ছে। ছেলের এমন নির্মম মৃত্যু কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না মা সাফিয়া। অবশেষে তিনি ষ্ট্রোক করে মারাই গেলেন। বিষয়টি বড়ই নির্মম। বড়ই কষ্টের।