রাজশাহীর দুই এলাকায় একই রাতে দুটি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। হত্যার শিকার হওয়াদের মধ্যে একজন মৎস্য চাষী ও একজন নৈশ্যপ্রহরী। রোববার দিবাগত রাতের কোন একসময় রাজশাহী মহানগরীর নওদাপাড়া ও গোদাগাড়ী উপজেলার লালাদীঘি এলাকায় এই দুটি হত্যাকা- ঘটে। নিহতরা হলেন, রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের চাপাল গ্রামের বাসিন্দা আবদুল খালেকের ছেলে মাছ চাষি মাসুদ আলী (৪২) এবং রাজশাহী মহানগরীর নওদাপাড়া এলাকার মহাসিনা নিপার অটোরিকশার গ্যারেজের নৈশ্যপ্রহরী আনিসুর রহমান (৭৫)। পৃথক এলাকায় এ ঘটনা হলেও দুজনকেই একইভাবে হত্যা করা হয়েছে। আর দুটি হত্যাকান্ডই চুরির জন্য করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
সোমবার (৩০ আগস্ট) সকালে লাশ উদ্ধারকালে কাকতালীয়ভাবে মিলে যাওয়া আলামতে দেখা গেছে, এই দ্জুনেরই হাত, পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় ছিল। স্থানীয়দের দেয়া তথ্য পেয়ে পৃথক ঘটনাস্থাল থেকে দুইটি লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায় পুলিশ। তবে গোদাগাড়ীর ঘটনাস্থল থেকে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় লিটন আলী (৩৬) নামের এক ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করে পুলিশ। সে মাছ চাষি নিহত মাসুদ আলীর সহকারি বলে জানা গেছে। জীবিত উদ্ধার হওয়া লিটন আলী দেওপাড়া ইউনিয়নের কানাইডাঙ্গা গ্রামের রিয়াজ আলীর ছেলে।
রাজশাহী মহানগরীর শাহমখদুম থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম খান সোমবার দুপুরে জানান, সকালে নওদাপাড়া বাজারে অবস্থিত মহাসিনা নিপার অটোরিকশার গ্যারেজের ভেতর হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় নৈশ্যপ্রহরী আনিসুর রহমানের লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা থানায় খবর দেয়। পরে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় ওসি বলেন, গ্যারেজ থেকে ইয়াছিন আলী নামের এক ব্যক্তির একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা এবং গ্যারেজ মালিকের অটোরিকশার জমার একদিনের টাকা খোয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে এসব চুরি করার সময় নৈশ্যপ্রহরী আনিসুরকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
এদিকে গোদাগাড়ী মডেল থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) কামরুল ইসলাম জানান, স্থানীয়দের কাছ থেকে প্রাপ্ত খবরে সকালে উপজেলার গোগ্রাম ইউনিয়নের কালাদিঘী এলাকার একটি পুকুর পাড়ের টিন সেটের ঘর থেকে মাছ চাষি মাসুদ আলীর লাশ হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তবে ঘটনাস্থল থেকে হাত-পা ও মুখ বাঁধা আহত অবস্থায় নিহতের সহকারি লিটনকে জীবিত অবস্থায় পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় ওসি বলেন, পুকুরের মাছ চুরি করার উদ্যেশ্যে রোববার দিবাগত রাতের কোন একসময় দুর্বৃত্তরা দুইজনকে জাল দিয়ে হাত-পা বেঁধে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। এতে মাসুদ মারা গেলেও কোনভাবে বেঁচে গেছেন লিটন। তবে যে জাল জব্দ করা হয়েছে সেটা দিয়ে মাছ ধরতে কমপক্ষে দশজন ব্যক্তির প্রয়োজন। এখন উদ্ধার হওয়া লিটনের দেওয়া তথ্য যাচায় বাছায় করা হচ্ছে। এছাড়াও হত্যার প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করাসহ আসামীদের ধরতে অন্যান্য আইনি কার্যক্রম চলছে। উভয় ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।