দক্ষিন এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম কাপ্তাই হ্রদে দীর্ঘ ৪মাস বন্ধ থাকার পর ১ সেপ্টেম্বর মধ্যরাত থেকে মাছ শিকার শুরু হচ্ছে। তাই জেলে পাড়া থেকে শুরু করে ফিসারী ঘাটে প্রাণের কর্মচাঞ্চলতা। কাপ্তাই হ্রদে মাছের প্রজনন ও কার্প জাতীয় মাছের বংশ বৃদ্ধির জন্য প্রতি বছর ১ মে থেকে তিন মাসের জন্য মাছ শিকার, বাজারজাত করণ ও বিপনন বন্ধ থাকে। তবে এবার অনাবৃষ্টির কারণে হ্রদের পানি বৃদ্ধি না পাওয়ায় জেলা প্রশাসন থেকে মাছ শিকারের উপর নিষেধাজ্ঞা দুই দফা বাড়ানো হয়।
গত কয়েকমাসে করোনার থাবায় দুমরে মুচরে যাওয়া জীবনে গতি ফেরাতে সকলেই এখন ব্যতিব্যস্ত। আর মৎস্যজীবীদের মাঝে ফিরে এসেছে কর্মচাঞ্চল্যতা। এ ছাড়া এর মধ্যেই মাছের প্রজনন মৌসুম শেষ হয়েছে বলেও জানিয়েছেন বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএফডিসি) মৎস্য কর্মকর্তারা। অন্যদিকে প্রায় চার মাস পর কাপ্তাই হ্রদে আবারও মাছ শিকারে নকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে জেলেরা। জেলেরা জানান, করোনার থাবা ও মাছ আহরণ নিষেধাজ্ঞার কারণে চার মাস কর্মহীন হয়ে বসে থাকতে হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে স্বস্তি ফিরে পান তারা।
রাঙ্গামাটি বিএফডিসির ব্যবস্থাপক নৌ কমান্ডার মোঃ তৌহিদুল ইসলাম জানান, প্রতি বছর মাছের প্রজনন ও কার্প জাতীয় মাছের বংশ বৃদ্ধির জন্য কাপ্তাই হ্রদে তিন মাসের জন্য সকল মাছ শিকার ও বিপনন বন্ধ থাকে। এবার অনাবৃষ্টি ও হ্রদে পানি কম থাকায় মাছ শিকার বন্ধের মেয়াদ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দু'দফা বাড়ানো হয়। যে কারণে এবার ৪ মাস মাছ শিকার নিষিদ্ধ ছিলো।
তিনি আরো জানান, কাপ্তাই হ্রদের মৎস্য সম্পদ রক্ষায় মাছ শিকারে এবার নতুন কিছু নিয়ম করে দেয়া হয়েছে। জালের দৈর্ঘ-প্রস্থ ও ছিদ্র কতটুকু রাখবে তা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। আর অনিবন্ধিত জেলেদেরও নিবন্ধনের আওতায় আনা হবে। আমরা আশা করছি আশানারুম রাজস্ব বৃদ্ধি হবে এবার।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোঃ মিজানুর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন, উৎপাদন ও বংশ বিস্তার সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ায় হ্রদে মাছ শিকার, আহরণ ও বিপণনের ওপর জারি করা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হচ্ছে। আগামী ১লা সেপ্টেম্বর মধ্যরাত থেকে হ্রদে সব ধরনের মাছ শিকার, আহরণ, পরিবহন ও বিপণন স্বাভাবিকভাবে করা যাবে।
মঙ্গলবার দিনগত রাত ১২টা ১মিনিট থেকে জেলেরা প্রথা মেনে পুঁজো দিয়ে হ্রদে নামবে মাছ শিকারের জন্য। জেলে পল্লীর পাশাপাশি মৎস্য সম্পদ নির্ভর প্রতিটি পেশার মানুষের মাঝে কর্ম চাঞ্চল্য বেড়ে গেছে।
আর ৭শ ২৫ বর্গকিলোমিটারের কাপ্তাই হ্রদের ওপর ২০ হাজার নিবন্ধিতসহ প্রায় ২৬ হাজার জেলের জীবিকা নির্ভর করে। বুধবার থেকে মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা ওঠে যাওয়ায় জেলে পল্লীসহ ব্যবসায়ী মহলে কমযজ্ঞ শুরু হয়েছে। প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরে পাচ্ছে রাঙ্গামাটি বিএফডিসি’র নৌযান ঘাটে।