উজানের পাহাড়ী ঢলে নেমে আসা কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমারসহ অর্ধশতাধিক নদ-নদীর পানি গত ১ সপ্তাহ থেকে ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়ে নিচু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। তবে বুধবার(১সেপ্টম্বর) ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়লেও বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। নদ-নদীগুলোর অববাহিকার চর ও দ্বীপ চরের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে জীবন-যাপন করছে। এসব এলাকার রাস্তা-ঘাট তলিয়ে থাকায় নৌকা হয়ে উঠেছে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম। কখনো এক নদীর পানি বাড়ছে তো অন্যদিকে আরেকটি নদীর পানি কমছে ,আবার পানি কমা-বাড়ার সাথে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। এসব এলাকার মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে, খাদ্য সংকট চরমে উঠছে।
বুধবার(১সেপ্টেম্বর ) কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, সকালে ব্রহ্মপুত্রের পানি বেড়ে চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৪২ সেন্টিমিটার, ধরলার পানি সামান্য কমে সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় পানির নিচে তলিয়ে আছে ধানসহ বিভিন্ন সবজির ক্ষেত। দীর্ঘদিন পানির নীচে থাকায় বেশিরভাগ ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন চরের কৃষকরা।
কুড়িগ্রাম সদর ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের বড়াই বাড়ি গ্রামের মাহাবুব বলেন,‘৩ বিঘা জমিতে আমন ধান রোপণ করছি। ২/৩ দিন নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে আমার আমন খেত তলিয়ে গেছে। পানি যদি স্থায়ী থাকে তাহলে তো আমন আবাদ নষ্ট হয়ে যাবে। অন্যদিকে করোনার কারণে সংসারের অবস্থা খারাপ তার মধ্যে যদি আবার আমন খেত নষ্ট হয়ে যায় কি হবে আমাদের।’
কুড়িগ্রাম কৃষি অফিসের তথ্যমতে,বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে ১৬ হাজার ৪'শ ৭ হেক্টর জমির রোপা আমন ও ২'শ ৭০ হেক্টর জমির সবজি ক্ষেত।
কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বন্যার্তদের জন্য ২৮০ মেট্রিক টন চাল ও ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হচ্ছে।