ফরিদপুরে গরুর প্রকৃত খামারীদের বাদ দিয়ে ডেইরী ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের কমিটি গঠন করায় প্রকৃত গরুর খামারীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প ও সুবিধা হতে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন। এ ব্যাপারে জেলা প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের নিকট লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
জানা গেছে, ফরিদপুরের বর্দ্ধিত পৌর এলাকা তথা সদর থানায় ছোটবড় মিলিয়ে প্রায় ১শ’টির মতো গরুর খামার রয়েছে। আর পুরো জেলায় এর সংখ্যা চারশ’রও বেশি। তবে ডেইরী ফারমার্স অ্যাসেসিয়েশনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী সদরে ৬০টি এবং পুরো জেলায় সাড়ে ৩শ’ গরুর খামার রয়েছে। খামারীদের অভিযোগ, প্রকৃত খামারীদের না জানিয়ে ডেইরী ফারফার্স অ্যাসোসিয়েশনের কমিটি গঠন করা হয়েছে। সংগঠনের সভাপতি একজন ঠিকাদার। তিনি নিজেই প্রকৃত খামারী নন। অন্য পদগুলোতেও যাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তারাও প্রধানত গরুর খামারী নন। প্রকৃত খামারী না হয়েও প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের সুপারিশে জেলা প্রশাসনের মধ্যস্থতায় শহরের ব্রাক্ষ্মসমাজ সড়কের দক্ষিণপূর্ব মোড়ে প্রায় দশ লাখ সমমূল্যের একটি দোকান হাতিয়ে নিয়েছেন সংগঠনের সভাপতি। করোনাকালে সরকারের ন্যায্যমূল্যের দুধ-ডিম বিক্রির কর্মসূচীও এদের কারণে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয়নাই। ওই কর্মসূচীর টাকাও হাতিয়ে নিয়েছে সুযোগসন্ধানীরা।
প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে, ফরিদপুরে ডেইরী ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেলা ও সদর থানার কোন অনুমোদিত কমিটি নয়। কোনপ্রকার মিটিং কিংবা রেজুলেশন না করেই একটি মহল এই কাগুজে কমিটি করে নানা দুর্নীতি চালাচ্ছে। শত শত গরু নিয়ে দীর্ঘদিন গরুর খামার করছেন এমন অনেক খামারীকেও এই কমিটিতে রাখা হয়নি। এসব কমিটিতে শতকরা ত্রিশ ভাগ গো-খামারীরাও নেই।
ফরিদপুরের বৃহৎ গরু ও মুরগির খামারী মুসলিম মিশনের ম্যানেজার মো. শহিদুজ্জামান বলেন, ফরিদপুরের মধ্যে মুসলিম মিশনের গরু ও পোল্ট্রি খামারটি অন্যতম বড় খামার। অথচ আমরাই করোনাকালে ন্যায্যমূল্যে দুধ, ডিম বিক্রির সুফল পাইনি। যারা এই কাজ বাস্তবায়নে প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের কাছে খামারীদের তালিকা দিয়েছে তারাই এই দুর্নীতি করেছে।
মোহাম্মদ আলী নামে তুলাগ্রামের আরেকজন খামারী বলেন, ফরিদপুরের এই ডেইরী ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনে জেলার শতকরা সত্তর ভাগ খামারীকেই সম্পৃক্ত করা হয়নি। ফরিদপুরের সদর থানা ডেইরী ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী কামরুল হাসান বলেন, ২০১৯ সালে ১১ সদস্যবিশিষ্ট এই কমিটি গঠন করা হয়। এরপর এটি ২১ স স্যে বাড়ানো হয়। কেন্দ্রীয় কমিটি ২০ আগস্টের মধ্যে এই কমিটির সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে ৪০ জনে উন্নীত করতে বলেছে।
এব্যাপারে জেলা ডেইরী ফারমার্স অ্যাসেসিয়েশনের সভাপতি মীর কাশেম আলী বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদন নিয়েই এক বছর দুই মাস আাগে আমাদের কমিটি করা হয়েছে। মাঝেমধ্যে মিটিং করি। তবে শেষ কবে মিটিং করেছি এটি এখন মনে করতে পারছি না। ফরিদপুর জেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তদরের কর্মকর্তা মো. নুরুল আহসান বলেন, জেলায় যারা প্রকৃত গরুর খামারী তাদের নিয়ে ডেইরী ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের কমিটি নতুন করে পুন:গঠনের জন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে চিঠি পাঠিয়েছি। সিলেকশন না হলে ইলেকশন করতে হবে।