রাজশাহীর চারঘাটে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আড়াই শতাধিক ভাতাভোগীর টাকা চলে গেছে অন্যের মোবাইলে। এদের দশ-এগারো জনের টাকা ফেরত এনে ভাতাভোগীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাকিরা এখনো সমাজসেবা দপ্তর ঘুরছেন।
উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চারঘাটে সরকারি ভাতাভোগির সংখ্যা ১২ হাজার ৭৪৮ জন। তার মধ্যে বিধবা ২ হাজার ৯৮৬ জন, প্রতিবন্ধী ৩ হাজার ৭৩ জন ও বয়স্ক ভাতাভোগী ৬ হাজার ৬৮৯ জন।
ভুল এন্ট্রির কারণে প্রায় সাড়ে আড়াই শতাধিক ভাতাভোগী টাকা টাকা পায়নি মর্মে আবেদন জানিয়েছে।
এর মধ্যে বয়স্ক ভাতাভোগী ১৯২ জন, বিধবা ৩৪ জন ও প্রতিবন্ধী ২৭ জন।
অভিযোগে টাকা না পওয়ার পরিমাণ প্রায় ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
বৃহস্পতিবার সরেজমিন উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে দেখা যায়, সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীরা বসে আছেন। ভাতার টাকা কবে পাবে তা জানার জন্য দিনের পর দিন ঘুরছেন। ভাতার দুই তিন কিস্তির টাকা না পেয়ে অনেকে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
সমাজসেবা কার্যালয়ে উপস্থিত ভাতাভোগীরা বলেন, আগে ভাতার টাকা ব্যাংকে দেওয়া হতো, লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা তুলতাম। সবাই একসাথে টাকা পেতাম। এখন ডিজিটাল করাতে গিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। অনেক ভাতাভোগীর মোবাইল ফোন নেই, নেই বিকাশ অ্যাকাউন্ট। তাদের টাকা সংগ্রহের জন্য তৃতীয় পক্ষের আশ্রয় নিতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে সমাজসেবা কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্তরা বলছেন, সুবিধাভোগীদের অ্যাকাউন্ট নগদ ও বিকাশ এজেন্টের লোকজন করেছেন। অ্যাকাউন্ট খোলার সময় ৪ ও ৮ এবং ৬ ও ৯ সংখ্যা উল্টো পাল্টা হয়ে অনেক ভাতাভোগীর নাম্বার ভুল হয়ে গেছে।
উপজেলার পরানপুর গ্রামের গৌরবজান বেগম বলেন, আমার বয়স্ক ভাতার ৩ হাজার টাকা অন্য নম্বরে চলে গেছে। ফোন করলে বলছে সে রংপুর আছে। টাকা ফেরত পাইনি। সমাজসেবা কার্যালয়ে গিয়েও কোনো কাজ হয়নি।
মিয়াপুর গ্রামের বেগম খাতুন (৬৫) স্বামী মৃত মুনসুর মোল্লা বলেন, বিধবা ভাতার টাকা পেতে তার মোবাইল নম্বরে হিসাব খোলা হলেও ভাতার কোনো হদিস নেই। ভাতা না পাওয়ায় তিনি ছয় দিন উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরে ধরনা দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন। করেছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চারঘাট উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মুহম্মদ মফিজুল ইসলাম বলেন, সমস্যাটি সারা দেশের সমাজসেবা কার্যালয়ের। আমাদের কাছে প্রায় ২৫০ জন মানুষ তাদের সমস্যা নিয়ে এসেছিল। আমরা তাদের তথ্য সংগ্রহ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশা করছি সমাধান হয়ে যাবে।