রংপুরের পীরগঞ্জে করতোয়া নদীর ভাঙ্গনে বিলীন হয়েছে কয়েক’শ ঘরবাড়ি বসতভিটা ও কৃষি জমি। ভাঙ্গনের শিকার পরিবরাগুলো ভিটেমাটি হারিয়ে এখন উদ্বাস্তুতে পরিনত হয়েছে। প্রতিদিন নতুন করে ভেঙ্গে যাচ্ছে ঘরবাড়ি। ইতিমধ্যেই ভাঙ্গন এসে ঠেকেছে মসজিদ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। বর্তমানে হুমকির মুখে পড়েছে এগুলো। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, করতোয়া উপর নির্মিত ড. ওয়াজেদ মিয়া সেতু হয়ে করতোয়া নদী চতরা ইউনিয়নের টোংরারদহ হয়ে চলে গেছে। নদীর ¯্রােতে দু পাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষের ঘরবাড়ি ভিটেমাটি মজিদ মাদ্রাসা এবং সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছে শত-শত পরিবার। ভারি বর্ষণ ও পানির ঢলের কারণে টুকুরিয়া ইউনিয়নের বিছনা,বোয়ালমারী,জয়ন্তিপুর, চতরা ইউনিয়নের কুমারপুর ঘাষিপুর, বড় বদনাপাড়া গ্রামের লোকজন অনেকেই অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। চতরা ইউনিয়নের কুমারপুর, পার-কুয়াতপুর, বড় বদনাপাড়া গ্রামসহ অধিকাংশ এলাকা ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়াও এসব এলাকার বাড়িঘর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মসজিদ ও শতশত একর কৃষি জমি হুমকির মুখে পড়েছে। স্থানীয়রা জানায়, গত কয়েক বছরে ওই গ্রামগুলোর শতশত পরিবার ভিটামাটি হারিয়ে ইতিমধ্যেই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে কয়েক’শ একর কৃষি জমি। এভাবে ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে এবং প্রতিরোধের ব্যবস্থা না করা হলে আগামীতে এসব এলাকা একসময় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে করতোয়ার গর্ভে। স্থানীয় করতোয়া পাড়ের বাসীন্দা ছিদ্দিক মিয়া এবং সোহরাব আলী বলেন গত কয়েক বছরে নিজেদের জায়গাজমি নদীতে হারিয়ে অন্যের জমিতে রয়েছি, সেখানেও বর্তমানে ভাঙ্গনের মুখে পড়েছি। প্রতি বছরে আমাদের ঘরগুলোর স্থান পরিবর্তন করতে হয়। বিছনা গ্রামের আকবর আলী,রমজান আলী বলেন আমরা পরপর কয়েকটি স্থানে ঘর পরিবর্তন করেছি এতেও কোন লাভ হয়নি। বর্তমানে অন্য গ্রামে মানুষের জমিতে কোনো রকমে ঠাঁই নিয়েছি। পার কুমারপুরের জলিল মিয়া বলেন- একসময় জমি জিরাত ছিল। ছিল গৃহস্থালী। করতোয়া সব গ্রাস করেছে। এখন আর কোন জমি নাই। জায়গাজমি হারিয়ে এখন দরিদ্রের তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তারা আক্ষেপ করে বলেন-আগামী কিছু দিনের মধ্যে হয়তো এ জায়গা ছেড়েও অন্য কোথাও চলে যেতে হবে আমাদের !