রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে শতাধিক অতিথি পাখি ‘শামুকখোল’ হত্যার ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন রাজশাহীর প্রকৃতিপ্রেমীরা। তারা রাজপথে নেমেছেন আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়েও। কর্মসূচির প্রথমদিন সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে রাজশাহীর প্রকৃতিপ্রেমীরা হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় না আনা হলে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি দেওয়া হবে। এর আগে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার জন্য ড্রেন নির্মাণ কাজ করার সময় কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিপনায় গত শনিবার রামেক হাসপাতালের দুটি গাছ কেটে ফেলে হত্যা করা হয় শতাধিক শামুকখোল পাখি ও তাদের বাচ্চা।
পাখির প্রতি নিষ্ঠুরাতার এমন প্রতিবাদে সোমবার আয়োজিত মানববন্ধন সমাবেশে বক্তারা বলেন, রামেক হাসপাতালের গাছ কেটে শত শত পাখি হত্যা করা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, কখনও উন্নয়নের নামে জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করা যায় না। এ ঘটনার দায় পরিবেশ অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্টরা এড়াতে পারেন না। পাখি ও গাছ নিধন জীববৈচিত্র্যের ওপর একটি বড় ধরনের অশনিসংকেত। তাই এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অনতিবিলম্বে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) রাজশাহীর সাধারণ সম্পাদক জামাত খানের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- বীর মুক্তিযুদ্ধো শাহাজাহান আলী বরজাহান, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ রাজশাহীর আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান রাজ, নদী ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক হোসেন আলী পিয়ারা প্রমুখ। এছাড়াও এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দিয়েছেন ইয়ুথ অ্যাকশন ফর সোস্যাল চেঞ্জ-ইয়্যাস ও পরিবেশবাদী যুব সংগঠন গ্রিন ভয়েস রাজশাহী জেলা শাখাসহ রাজশাহীর বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন সেভ দ্য ন্যাচারের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান।
বক্তারা আরও বলেন, রাজশাহীতে শামুকখোল প্রজাতির পাখিদের বসবাসের জন্য প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন জায়গায় পাখিদের বসবাস উপযোগী গাছপালা কেটে আশ্রয়হীন করা হচ্ছে তাদের। মানুষের এমন নিষ্ঠুর আচরণের পরও এই প্রজাতির পাখি ঘুরেফিরে রাজশাহীতে কোনোমতে টিকে রয়েছে। কিন্তু এবার শামুকখোল পাখির প্রতি নিষ্ঠুরতা অতীতের সবকিছুকে হার মানিয়েছে।