প্রতি বুধবার নওগাঁ শহরের কেন্দ্রবিন্দু মুক্তির মোড় থেকে পূর্ব দিকে জেলা পরিষদ পার্কের পাশের্^ সমবায় অফিস চত্ত্বরে বসে গাছের হাট। এ হাটে সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত কেনা বেচা হয় ফলজ, বনজ, ওষধি, ফুল, অর্কিড সহ ক্যাকটাস জাতীয় বিভিন্ন প্রকার গাছ। সপ্তাহের নিদৃষ্ট দিন ছাড়াও প্রতিদিনই স্থায়ী বিক্রেতার কাছে চাহিদা অনুযায়ী পাওয়া যায় নানা প্রকার গাছ। নওগাঁর এ গাছের হাটের সাথে জড়িয়ে আছে হাটের শহর নওগাঁর বহু অতীত স্মৃতি। একসময় প্রতি বুধবার ও শনিবার নওগাঁ পৌর এলাকার প্রধান সড়ক সহ সকল সড়কেই বসতো বিভিন্ন পসারের হাট। এ ছাড়া মঙ্গল ও বৃহস্পতি বার কেনা বেচা হতো চাল। সে সময় নওগাঁয় কোন গাছের হাট ছিল না। শহরের ডাবপট্টি সড়কের ফুটপাতে বুধবারে কেনা বেচা হতো বিভিন্ন প্রকার সব্জি ও ফুলের গাছ ও বীজ। ১৯৭৫ এরপর নওগাঁ শহরের পুরাতুন ডিসি অফিসের সামনে জনৈক মোবারক হোসেন ফুটপাতে প্রথম শুরু করেন ফুল গাছের ব্যবসা। এরপর এর সাথে দু একজন করে যুক্ত হতে থাকেন অনেকে। ফুল গাছের বাজার পরিবর্তন হয়ে গড়ে ওঠে গাছের হাট। গাছের হাটকে কেন্দ্র করে নওগাঁয় বাড়তে থাকে নার্সারির সংখ্যাও। ডিসি অফিস সংলগ্ন ও ছোট সড়কের পাশে এ রকম একটি হাট গড়ে ওঠায় ডিসি অফিসের সোন্দর্য নষ্ট ও চলাচলের অসুবিধার কারণে নওগাঁর সাবেক জেলা প্রশাসক বৃক্ষপ্রেমী উ্য ক জেন ৯০ এর দশকে এই গাছের হাটকে লিটন সেতুর পশ্চিম পাড়ে পুরাতুন হাসপাতাল সড়কের দক্ষিণ উৎস মুখে সরিয়ে নেন। এখানে হাটের পরিসর বৃদ্ধি পেলে সেখান থেকে সামান্য উত্তরে পুরাতুন হাসপাতালের সামনে হাটটিকে সরিয়ে নেওয়া হয়। এখানে আবারও জানজটের সমস্য হওয়ায় নওগাঁ জেলা সমবায় ভবনের পরিত্যাক্ত জেলা সমবায় শিক্ষায়াতনের সামনে খোলা প্রায় ৫০ বর্গফুট অংশে এই হাট সরিয়ে নেওয়া হয়। এখনো হাটটি একই স্থানে ‘গাছের মার্কেট’ নামে প্রতিবুধবার দিনমান চলে। এই হাটে শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বয়স্ক নারী-পুরুষ গাছ কিনতে আসেন। এ হাটের স্থায়ী ব্যবসায়ীরা জানান নওগাঁয় ছাঁদ বাগানের প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় হাটে কেনা বেচা হয় প্রচুর। এখান থেকেই বৃক্ষপ্রেমীরা গাছ কিনে একদিকে যেমন ছাঁদ বাগান করছেন অপর দিকে তেমন ঘরে রাখা যায় এমন গাছ দিয়ে ঘর সাজিয়ে প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের চাহিদা পূরণ করছেন। দিন দিন হাটে ক্রেতার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এখানেও যানজট বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ছাড়া বেচা কেনার যায়গাটি আনুপাতিক হারে ছোট হওয়ায় অনেক বিক্রেতাকে সড়কের দু পাশে পসার মেলাতে হয়। তাই তারা হাটের পরিসর বাড়ানোর জন্য অস্থায়ী ভাবে নওগাঁ জেলা সমবায় অফিসের হাট লাগোয়া পরে থাকা ফাকা জায়গায় হাট বৃদ্ধির দাবি জানান।