দিনাজপুর কাহারোলে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের বিভিন্ন জমিতে বাতি জ¦ালালে পোকা মরোছে। কাহারোল উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের প্রান্তিক কৃষক দীনেশ চন্দ্র রায় বলেন, উচ্চ মূল্যের কীটনাশক ব্যবহার করে ফসলের ক্ষতিকারক পোকামাকড় দমনে প্রচলিত পদ্ধতির পরিবর্তে নাম মাত্র খরচে “আলোক ফাঁদ” ব্যবহারে সুফল পাচ্ছে আমন চাষীরা।
কাহারোল উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি বছর কাহারোল উপজেলায় ৬টি ইউনিয়নে ১৪ হাজার ৭’শ ৫০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ করা হয়েছে। তার মধ্যে ৩ হাজার ৩’শ হেক্টর জমিতে সুগন্ধি ব্রিধান-৩৪ আবাদ করা হয়েছে। গোটা উপজেলাকে ১৮টি ব্লকে বিভক্ত করে আলোক ফাঁদ ব্যবহারের মাধ্যমে রোপা আমন ধানের ক্ষতিকর পোকামাকড় দমনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বর্তমানে একযোগে ১৮টি ব্লকে “আলোক ফাঁদ” কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। “আলোক ফাঁদ” ব্যবহারে ক্ষতিকর শত্রু পোকা ও উপকারী বন্ধু পোকাও নির্ণয় করা হচ্ছে। এতে প্রতি সপ্তাহে শত শত কৃষক “আলোক ফাঁদ” ব্যবহারে উপকারীতা প্রত্যক্ষ করছেন। ফোকা দমনে আলোক ফাঁদে কার্যকারিতা সম্পর্কে কৃষকদের সচেতন করার কাজ চালানো হচ্ছে। রোপা আমন মৌসুমে সচেতনতার অভাবে অনেক কৃষক জমিতে ক্ষতিকর পোকা আক্রমণ করার আগেই কীটনাশক প্রয়োগ করে থাকে। আলোক ফাঁদ ব্যবহার করে ক্ষতিকর পোকা উপস্থিতি নির্ণয়ের পর কীটনাশক প্রয়োগ করতে এই প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষকদের উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা এস.এম আবদুর রহিম জানান, ধান ক্ষেতে কীটনাশক ব্যবহার না করে “আলোক ফাঁদ” পেতে ক্ষতিকর পোকা দমন করা হচ্ছে। আলোক ফাঁদে উপকারী পোকার মধ্যে ড্যামসেল ফ্লাই ও মাকড়সা এবং ক্ষতিকর পোকার মধ্যে মাজরা পোকা ও সবুজ পাতা ফড়িংয়ের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এর মাধ্যমে ধানের উপকারী পোকা সংরক্ষণ এবং ক্ষতিকর পোকা দমনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
কাহারোল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা আবু জাফর মোঃ সাদেক বলেন, ব্লাষ্ট ও কারেন্ট পোকা প্রতিরোধের জন্য কৃষকদের মাঝে লিফলেট, প্রেসক্রিপশন বিতরণ করা হচ্ছে। কৃষকদের দলীয় আলোচনা সভার মাধ্যমে আলোক ফাঁদের উপকারিতা অবহিত করা হচ্ছে। আলোক ফাঁদ প্রযুক্তি একটি পরিবেশবান্ধব ও অর্থ সাশ্রয়ী পদ্ধতি। এতে চাষিরা নিজেরাই ক্ষতিকর ও উপকারী পোকা শনাক্ত করে ক্ষতিকর পোকামাকড় দমনের ব্যবস্থা করতে সক্ষম হবেন বলেও আশা ব্যক্ত করেন।