বাগেরহাটের শরণখোলায় সর্বত্র ভাইরাসজনিত রোগে ব্যাপক আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি ও বহির্বিভাগে প্রতিদিন জর¡, সর্দি-কাশি, গা ব্যাথা নিয়ে গড়ে শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা বেশি। বর্তামানে এ হাসপাতালে নিউমোনিয়াসহ জ্বর, সর্দি-কাশির ২০ জনের মতো শিশু ভর্তি রয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে দুজনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া, বয়স্করাও এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালের বাইরেও উপজেলার পল্লী চিকিৎকদের কাছে এরা চিকিৎসা নিচ্ছে। যাদের অবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় তারাই হাসপাতালে আসছে। আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে এই রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত স্বাস্থ্য সহকারী বিপ্লব সাধক জানান, গত এক সপ্তাহে জরুরি বিভাগে দুই শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে ৬৭ জনই এক বছর থেকে ১২ বছরের শিশু। এরা সবাই শ্বাসকষ্ট, জ্বর,সর্দি-কাশ নিয়ে চিকিৎসা নেয়। এদের মধ্যে নিউমোনিয়া আক্রান্ত ১৮ মাস বয়সী সাইমুন ও ৭ মাস বয়সী আয়শাকে গুরুতর অবস্থায় খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠনো হয়েছে। গত একসপ্তাহে জরুরি ও বহির্বিভাগ মিলিয়ে হাপাতালে পাঁচ শতাধিক নারী-পুরুষ, শিশু রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে দুই শতাধিক শিশু রয়েছে।
শরণখোলা বহির্বিভাগের চিকিৎসক ডা. প্রিয়গোপাল বিশ্বাস জানান, তিনি এক দিনে বিভিন্ন বয়সের ৬৫ জন রোগী দেখেছেন। এর মধ্যে ২৫ ভাগই জ্বর, সর্দি-কাশির রোগী। যাদের সংক্রমণের মাত্রা বেশি, তাদেরকে ভর্তি করা হচ্ছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফ্লু কর্ণারে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আরিফুল ইসলাম রাকিব জানান, তিনি সকাল ৯টা থকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত ৮০ জন রোগী দেখেছেন। এর মধ্যে অর্ধেকই শিশু রোগী। বেশিরভাগ শিশুর নিউমোনিয়ার লক্ষণ রয়েছে। ফ্লু একটি ভাইরাসজনিত রোগ। আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে এর সংক্রমণ বেড়েছে। আর শিশুরাই আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। এই ভাইরাসে শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দি-কাশি থাকে।
ডা. আরিফুল ইসলাম জানান, প্রতিদিনই রোগীর চাপ বাড়ছে। ডাক্তার ও জনবল সংকটের কারণে রোগীর চাপ সামলাতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তার ও জনবল নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন এই চিকিৎসক।