কুমিল্লার হোমনায় আলম (৪৩) নামে সাব রেজিস্ট্রার অফিসের এক পিয়নের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার ভোর চারটার দিকে উপজেলার চৌরাস্তা মোড়ের এক প্রবাসির স্ত্রী রেহানা বেগমের ভাড়া বাসায় রহস্যজনক এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
ময়না তদন্তের জন্য লাশ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
এই ঘটনায় নিহতের মেয়ে আঁখি হোমনা থানায় একটি মামলা করেন।
পুলিশ ও চিকীৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অতিরিক্ত অ্যালকোহল বা যৌন উত্তেজক ওষুধ খেয়ে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হলে হতেও পারে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই নারীর সঙ্গে আলম মিয়ার দীর্ঘ দিনের পরকিয়া সম্পর্ক ছিল।
স্বামী জহিরুল ইসলাম বিদেশে থাকার কারণে
হোমনা সদরের বদলহাজি বাড়ির মৃত তোতা মিয়ার মেয়ে রেহানা বেগম (২৬) হোমনা চৌরাস্তায় মো. আফাজউদ্দিনের পাঁচতলা বিল্ডিংয়ের তৃতীয় তলায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন।
রেহানা বেগমের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্কের কারণেই আলম মিয়া ওই বাসায় নিয়মিত যাতায়াত করতো।
এরই ধারাবাহিকতায় ওই রাতেও আলম ওই নারীর বাসায় গিয়ে রাত তিন টার পরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে।
এমন পরিস্থিতিতে রেহানা বেগম আলমের ফোন থেকেই আলমের স্থানীয় এক বন্ধু মো. রফিকুল ইসলামকে ডাকেন।
তারই সহযোগীতায় ভোর চারটার দিকে চিকিৎসার জন্য আলমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়।
সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক আলমকে মৃত ঘোষণা করেন।
সঙ্গে সঙ্গে রেহানা বেগম হাসপাতালে ভুল ঠিকানা ও তার ছদ্দনাম রিপা উল্লেখ করে সেখান থেকে দ্রুত পালিয়ে যায়।
আলম মিয়ার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সে দাউদকান্দি উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে পিয়ন (এমএলএসএস) হিসাবে কর্মরত ছিলেন।
আলম হোমনা পূর্বপাড়া গ্রামের মো. আক্তার হোসেনের ছেলে। সে দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক।
এ বিষয়ে রেহানা বেগমের ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
হাসপাতালে নেওয়া আলমের বন্ধু মোবাইল ব্যবসায়ী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, কাস্টমার সূত্রে আলম আমার বন্ধু। তার সাথে রাত আটটায় দাওয়াতে যাওয়ার কথা ছিল; কিন্তু যেতে পারি নাই।
রাত সাড়ে তিনটার দিকে আলমের মোবাইল ফোন থেকে এক মহিলা (রেহেনা বেগম) আলমের অসুস্থতার কথা জানান।
আমি গিয়ে আলমকে ওই বাসার সিঁড়িতে অজ্ঞান অবস্থায় দেখি।
পরে ওই (রেহেনার বাসা) বাসা থেকে আলমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই।
হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাহিদা সিকদার বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই রোগীর (আলম) মৃত্যু হয়েছে।
মৃত্যুর কারণ বলতে গিয়ে তার পূর্ব অভ্যাস ও আগতদের দেওয়া তথ্যমতে অতিরিক্ত অ্যালকোহল বা যৌন উত্তেজক ওষুধ সেবনের ফলেও হার্ট অ্যাটাক হয়ে তার মৃত্যু হতে পারে বলে ধারণা করছেন। পোস্ট মর্টেম ছাড়া প্রকৃত কারণ বলা যাবে না বলেন তিনি।
হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কায়েস আকন্দ বলেন, নিহত আলমের স্বজনরা জানায় আগে থেকেই তার হার্টের সমস্যা ছিল। হার্ট অ্যাটাকেই মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হয়েছে। অতিরিক্ত নেশা করার কারণও হতে পারে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য কুমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলা হয়েছে। রেহানা বেগমকে খুজছি। তাকে পেলেই মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।