বিরলে আসামি ছিনতাই ও পুলিশকে মারপিটের ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা প্রায় অর্ধশত মানুষের নামে আলোচিত মামলায় পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে প্রায় গোটা কাজিপাড়া গ্রাম। পুরুষদের সাথে অনেক মহিলাও গ্রাম ছেড়েছে। স্কুল কলেজ খুলে দেয়া হলেও অনেক শিক্ষার্থী আসামি থাকার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না গিয়ে ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এদিকে এমন পরিস্থিতির কথা জানতে পেরে, গত মঙ্গলবার দুপুরে বিরল উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান এলাকা পরিদর্শন করতে গিয়ে নির্দোষ এবং পুলিষের ভয়ে ভীত সন্ত্রস্থ পরিবারগুলোর লোকজনের সাথে কথা বলে নির্ভয় ও ন্যায় বিচারের আশ্বাস প্রদান করেছেন। তিনি বলেন, আসামি ছিনিয়ে নেয়া ও মারপিটের ঘটনার সাথে জড়িতদের অবশ্যই দেশের প্রচলিত আইনে বিচার হবে। তবে যারা এঘটনার সাথে জড়িত নয় তাদের যেন কোন প্রকার হয়রানী না করা হয়, আমি এ ব্যাপারে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে অবশ্যই কথা বলবো। তিনি মহিলাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা যারা পুলিশের এজাহার নামীয় আসামি নন তারা নিজ বাড়ীতেই থাকবেন। কোন প্রকার পুলিশি ভয় পাবেন না। আমরা এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের আইনশৃঙ্খলা সভায় কথা বলেছি। প্রয়োজনে জেলাতেও কথা বলবো। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বিরল প্রেসক্লাবের সভাপতি এম, এ কুদ্দুস সরকারসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ। অপরদিকে, পুলিশের আটককৃত এজাহার নামীয় আসামি আমজাদ হোসেনের ছেলে মাদ্রাসা পড়-য়া শিক্ষার্থী হাফেজ মোঃ আবু রায়হান স্বপন (১৮) ও মনজুর হোসেনের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন (৫০) গত সোমবার জামিনে মুক্ত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একই মামলায় ১৩ জন আসামি আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন জানালে বিচারক জামিন না মঞ্জুর করে তাঁদের জেলহাজতে পাঠিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন আসামীপক্ষের আইনজীবী এড. মাযহারুল ইসলাম সরকার।
উল্লেখ্য, একটি মারামারির ঘটনায় উপজেলার রাণীপুকুর ইউপি’র কাজিপাড়া গ্রামের নুরজামাল এর ছেলে মেহেদী হাসান (২২) কে তার নিজ বাড়ী থেকে ৮/৮ নং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ আজাদ মিয়াসহ সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স গত ৬ সেপ্টেম্বর/২১( সোমবার) সন্ধ্যায় গ্রেফতার করতে গেলে গ্রেফতারকৃত মেহেদীর পরিবারের লোকজন পুলিশকে মারপিট করে মেহেদীকে ছিনিয়ে নেয় বলে বিরল থানার এসআই আজাদ আলী বাদী হয়ে ওই রাতেই বাদী হয়ে কাজীপাড়া গ্রামের ছাত্র, মহিলাসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরোও ২০/২৫ জনকে দেখিয়ে সংশ্লিষ্ঠ ধারায় একটি মামলা দায়ের করে। এ ঘটনায় রাতেই পুলিশ ওই গ্রামে তান্ডব চালিয়ে আমজাদ হোসেনের ছেলে মাদ্রাসা পড়-য়া শিক্ষার্থী হাফেজ মোঃ আবু রায়হান স্বপন এবং মনজুর হোসেনের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন কে গ্রেফতার করে পরদিন জেল হাজতে প্রেরণ করে। এর পরেই ওই গ্রামটি পুলিশ আতঙ্কে পুরুষ শূন্য হয়ে পড়ে। অনেক ছাত্র পুলিশের এজাহার নামীয় আসামি এবং ওই মামলায় ২০/২৫ জন অজ্ঞাতনামা আসামি থাকার কারণে মহিলারাও গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়। গ্রামটিতে সব সময় পুলিশ আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।