“চার দরিদ্র গৃহবধূর নামে আয়কর পরিশোধের নোটিস” শিরোনামে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। অবশেষে দরিদ্র সেই চার গৃহবধূর জরিমানার টাকা মওকুফ করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই চারজনকে কর আরোপ করা যাবেনা মর্মে কমিশনে নথিভূক্ত করা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে সার্কেল-৭ কর অঞ্চল বরিশালের উপ-কর কমিশনার মোঃ মঞ্জুর রহমান বলেন, গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি তাদের নজরে আসে। পরবর্তীতে নোটিস পাওয়া গৃহবধূদের পক্ষে আয়কর অবমুক্তির জন্য আবেদন করায় তাদের জরিমানার টাকা মওকুফ করা হয়।
তিনি আরও জানান, ওই গৃহবধূদের জাতীয়পরিচয়পত্র ব্যবহার করে ই-টিআইএন গ্রহন করায় নিয়ম অনুযায়ী তাদেরকে রিটার্ন দাখিলের জন্য নোটিশ প্রদান করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে যখন জানা গেছে, ওই চারজনই হতদরিদ্র গৃহবধূ তখন তাদের জরিমানার টাকা মওকুফ করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই চারজনকে কর আরোপ করা যাবেনা মর্মে কমিশনে নথিভূক্ত করা হয়েছে।
জরিমানা পরিশোধের নোটিশ পাওয়া গৃহবধূ সেলিনা বেগমের পুত্র কলেজ ছাত্র মাহফুজুর রহমান জানান, দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেন। পরবর্তীতে ইউএনও স্যারের পরামর্শে অতিসম্প্রতি বরিশাল উপ-কর কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে আয়কর অবমুক্তির জন্য আবেদন করা হয়। এরপর কমিশন থেকে জরিমানার টাকা মওকুফ করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে এরকম নোটিস আসবেনা বলেও আমাদের জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, জেলার গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়নের শরিফাবাদ গ্রামের মাহেন্দ্রা চালক ফারুক হোসেনের স্ত্রী গৃহবধূ সেলিনা বেগম আয়কর রিটার্নের টাকা না দেওয়ায় তাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং ভ্যানচালক কবির ইসলাম বেপারীর স্ত্রী কল্পনা বেগম, দিনমজুর মহসিন বেপারীর স্ত্রী সুবর্না মোহসিন এবং বিল্বগ্রাম এলাকার দিনমজুর চাঁনমিয়া সরদারের স্ত্রী মনোয়ারা বেগমকে ভিন্ন ভিন্ন তারিখে আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য বরিশাল উপ-কর কমিশনার কার্যালয়ের (বৈতনিক) শাখা থেকে উপ-কর কমিশনার স্বাক্ষরিত নোটিসগুলো ইস্যু করা হয়েছিলো।
এরমধ্যে নোটিসপ্রাপ্ত গৃহবধূ কল্পনা বেগম, সেলিনা বেগম ও সুবর্না মোহসিন একই পরিবারের আপন তিন সহদরের স্ত্রী। তাদের আগামী ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জরিমানার টাকা পরিশোধের জন্য নোটিসের মাধ্যমে নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো।