আর ক’দিন গেলেই সবুজ মাঠ থেকে সোনলী ধান ঘরে আসবে তাই রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার লাখো কৃষক-কৃষাণী এখন সোনালি স্বপ্নে বিভোর। চলতি আমন মৌসুমে প্রকৃতির বৈরিতার পরেও সম্পুরক সেচ দিয়ে আমন চারা রোপণ করেছেন চাষিরা। প্রখর রোদ আর ঝিরঝিরে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন করছেন তারা। চারা রোপণের পরপরই দফায় দফায় বৃষ্টি আর কৃষকের নিবিড় পরিচর্যায় রোপণ করা চারা দ্রুত বেড়ে উঠেছে। সবুজে ছেঁয়ে গেছে মাঠের পর মাঠ। ভাদ্রের তালপাকা গরম ও হাল্কা হাওয়ায় দোল খাচ্ছে দিগন্ত জুড়ে সবুজের চাদরে ঢাকা ধান ক্ষেত যেনো কৃষকের সোনালী স্বপ্নে হাতছানি।
কৃষকের স্বপ্ন পূরণে নিরলস কাজ করছে কৃষি বিভাগ। তাদের আন্তরিকতায় কৃষিতে লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। যান্ত্রিক পদ্ধতিতে প্রায় ১শ বিঘা জমিতে ধানের চাষা রোপন করেছেন কৃষকেরা। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি রোপা আমন মৌসুমে হাইব্রিড জাতের ৯’শ ৫০ হেক্টর, উফশি জাতের ১ হাজার ৫০ হেক্টর ও দেশী জাতের ১০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। সরজমিন ঘুরে ধান চাষের বিষয়ে কথা হয় উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকের সাথে। নিজপাড়া গ্রামের ধান চাষী শ্রী বাসু দেব বলেন, এ বছর চারা রোপণের সময় পানির অভাবে হামরা সেচ দিয়ে চারা রোপণ করছি। এখন অবশ্য দু’এক দিন পরপর বৃষ্টি হচ্ছে। ক্ষেতের অবস্থা আপাতত ভালোই দেখা যাচ্ছে। তবুও যাকে কোনো রকম ক্ষতি না হয় সে জন্য নিয়মিত কীটনাশক স্প্রে করছি তা ছাড়া কৃষি বিভাগের পরামর্শে পাচিং করায় পোকার হাত থেকে বাঁচা গেছে। টেপামধুপুরের বিশ^নাথ গ্রামের কৃষক মোঃ বাতেন মিয়া, ঢুষমারা চরের কুষক কোব্বাত বলেন, চলতি আমন মৌসুমে কৃষি অফিস থেকে আমাদেরকে বিনামূল্যে সার ও স্বল্পমেয়াদী উচ্চফলনশীল হাইব্রিড এজেড এবং বিনা-১৭ জাতের ধানবীজ দিয়েছে। আমরা কৃষি অফিসের পরামর্শ মত বীজ বপন ও রোপন করেছি। বর্তমানে ক্ষেতের চেহারা খুব ভালো। আশা করি অন্যান্য বারের চেয়ে অধিক ফসল ঘরে তুলতে পারবো। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহনাজ পারভীন জানান,আমি নিজে এবং সকল উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ ও সেবা দিয়ে যাচ্ছি। চলতি মৌসুমে লাইফ পার্চিং করা হয়েছে ৩ হাজার ৫’শ হেক্টর এবং ডেড পার্চিং করা হয়েছে ৫ হাজার ৭৮ হেক্টর জমিতে। তিনি জানান উপজেলায় ১১ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ৩১ হাজার ৯৯২ মেট্রিক টন। আশা করছি লক্ষ্য মাত্রা অর্জন হবে।