রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় উচ্চ আদালতে আগাম জামিনের পর নি¤œ আদালতেও জামিন পেয়েছেন মিনুসহ রাজশাহীর শীর্ষ তিন বিএনপি নেতা। জামিনপ্রাপ্তরা হলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম উপদেষ্টা সাবেক এমপি ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, দলটির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সভাপতি ও রাসিকের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল এবং বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুণর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন।
রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় এই তিন নেতা রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণের পর জামিনের আবেদন করেন। পরে দুপুর পৌনে তিনটার দিকে আদালতের বিচারক এইচএম ইলিয়াস হোসাইন আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ৫ হাজার টাকার বন্ডে তিনজনের প্রত্যেকের জামিন মঞ্জুর করেন। আর তাদের আত্মসমর্পণকে কেন্দ্র করে আদালত প্রাঙ্গণে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছিলেন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এর আগে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক গত ২৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির এই তিন শীর্ষ নেতা নি¤œ আদালতে আত্মসমর্পণ করতে যান। কিন্তু আদালতে মূল নথি না থাকায় ২৬ সেপ্টেম্বর আত্মসমর্পণের জন্য পরবর্তী দিন ধার্য করে মামলার নথি তলব করেন বিচারক।
এ তথ্য নিশ্চিত করে আসামিপক্ষের আইনজীবী আলী আশরাফ মাসুম জানান, আদালতে আত্মসর্মপণের পর উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে বিচারক তাদের জামিন মঞ্জুর করেছেন।
আত্মসমর্পণের সময় আদালত চত্বরে বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আবু সাঈদ চাঁদ, বোয়ালিয়া থানা সভাপতি সাইদুর রহমান পিন্টু, সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম মিলু, সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল হোসেন দিলদার, রাজপাড়া থানা সভাপতি শওকত আলীসহ দলটির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসজ্ঞত, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত ৩১ মার্চ রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্টেট আদালতের বিচারক সাইফুল ইসলাম এই চার নেতার গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছিলেন। এর আগে গত ১৬ মার্চ রাজশাহীর আদালতে এই চার নেতার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও রাজশাহী মেট্রোপলিটন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মুসাব্বিরুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, গত ২ মার্চ মহানগরীর মাদরাসা ময়দান সংলগ্ন নাইস কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত রাজশাহীর বিভাগীয় সমাবেশে বিএনপির এই চার নেতা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারকে উৎখাতের অসৎ উদ্দেশ্যে প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়া ছাড়াও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অশোভন বক্তব্য প্রদানের অভিযোগ উঠে। ওই বক্তব্য দেওয়ার ঘটনায় মিনুকে ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানিয়ে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিল রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ। পরে ই-মেল বার্তায় দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন বিএনপি নেতা মিনু। কিন্তু ই-মেল বার্তায় দুঃখ প্রকাশের বিষয়টি গ্রহনযোগ্য নয় দাবি করে মামলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছিলেন বাদি অ্যাডভোকেট মুসাব্বিরুল ইসলাম। যার প্রেক্ষিতে গত ৯ মার্চ রাজশাহী জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে মামলার অনুমতি চেয়ে আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১৬ মার্চ মামলা রেকর্ড করেন আদালত।