নওগাঁর মান্দায় জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে বাঁশের বেড়া দিয়ে ৮টি দোকানঘর ঘিরে রাখা হয়েছে। এ কারণে গত ১৯ দিন ধরে দোকানঘর খুলতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। দফায় দফায় সালিস বৈঠক হলেও কোন সুরাহা হয়নি। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ঐতিহাসিক কুসুম্বা শাহী মসজিদ সংলগ্ন রেস্টহাউজ এলাকায়।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ব্যবসা করতে না পারায় তাঁরা আর্থিকভাবে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন। দোকানে থাকা লাখ লাখ টাকার মালামাল নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। দুই পক্ষের বিরোধে বলির পাঠায় পরিণত হয়েছেন তাঁরা।
স্থানীয়রা জানান, কুসুম্বা ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের জার্জিস বিশ্বাস ও তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী সালেহা বিবি একই দলিলে আট আনা অংশে ওই মৌজায় ২.৯৫ একর জমি ক্রয় করেন। জার্জিস বিশ্বাসের মৃত্যুর পর তাঁর ছেলেমেয়েরা বাবার অংশ ভোগদখল করছেন।
তাঁরা আরও বলেন, সাহেলা বিবি নিঃসন্তান হওয়ায় তাঁর অংশের জমি মনির উদ্দিন মৃধা ও ইমান আলী কবিরাজের কাছে বিক্রি করে দেন। ইমান আলী মারা যাওয়ার পর তাঁর ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান মুরাদ ওই সম্পত্তির মালিক হন। তাঁর কাছ থেকে কুসুম্বা গ্রামের রফিকুল ইসলাম গংরা কবলা করেন।
কবলাদার রফিকুল ইসলাম জানান, ‘সঠিক কাগজপত্র দেখে আমরা ওই সম্পত্তি কবলা করেছি। এরপর দখল নিতে গেলে জার্জিস বিশ্বাসের ওয়ারিশগণ বিভিন্নভাবে বাধা প্রদানসহ হুমকি দেন। এনিয়ে কুসুম্বা ইউনিয়ন পরিষদ ও মান্দা থানায় একাধিকবার সালিস বৈঠক হয়েছে। কিন্তু জার্জিস বিশ্বাসের ছেলেরা এসব বৈঠকের রায় অমান্য করায় জটিলতার সৃষ্টি হয়। উপায়ান্ত না থাকায় আমরা বেড়া দিয়ে ওই সম্পত্তি ঘিরে দিয়েছি।’
অন্যদিকে প্রতিপক্ষ ইসরাইল আলম বিশ্বাস জানান, ‘বাবা জার্জিসের মৃত্যুর পর ওয়ারিশান সূত্রে আমরা কয়েক ভাই-বোন ওই সম্পত্তি ভোগদখল করে আসছি। হঠাৎ করেই ওই সম্পত্তির মালিকানা দাবি করেন কুসুম্বা ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান মুরাদ। বিরোধ নিষ্পত্তি না করেই ওই সম্পত্তি রফিকুল ইসলাম গংদের কাছে দানপত্র দলিল করে দেন। এ বিষয়ে নওগাঁ আদালতে আমি চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার মামলা করেছি।’
ভুক্তভোগী দোকানি রমজান আলী রিংকু বলেন, ‘দীঘদিন ধরে ওই জায়গা ভাড়া নিয়ে দোকানঘর নির্মাণসহ আমরা ব্যবসা করে আসছি। জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে সম্প্রতি বেড়া দিয়ে আমাদের দোকানঘর ঘিরে দিয়েছে একপক্ষ। এতে করে আমরা দোকান খুলতে পারছি না। ব্যবসা করতে না পারায় ঋণের কিস্তি পরিশোধ দুরূহ হয়ে পড়েছে। পরিবার পরিজন নিয়ে দুর্বিসহ দিন কাটাতে হচ্ছে।’
এ প্রসঙ্গে মান্দা থানার উপপরিদর্শক আবু হাসান বলেন, জমি সংক্রান্ত বিষয় হওয়ায় স্থানীয়ভাবে নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়নি। ঘটনায় একপক্ষ আদালতে মামলা করেছেন। আদালতের রায় না হওয়া পর্যন্ত উভয়পক্ষকে বিরোধে না জড়ানোর জন্য বলা হয়েছে।