ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা ও তালিকাভুক্ত রাজারকার মকবুল খানের ছেলে ফিরোজ খান আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তালমা ইউনিয়ন থেকে আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী হচ্ছেন বলে এলাকায় গুঞ্জন চলছে।
জানা গেছে, নৌকার মনোনয়ন পেতে ইতোমধ্যে স্থানীয় প্রভাবশালী এক নেতার মাধ্যমে তদবির ও লবিং করেছেন তিনি। এদিকে বিএনপি নেতা ও রাজাকার পুত্র ফিরোজ খানের নৌকার মনোনয়ন চাওয়ার গুঞ্জনে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে তীব্র অশন্তোষ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা অভিযোগ করে বলেন, ফিরোজ খান এলাকায় বিএনপির পদধারী নেতা। তিনি বিএনপির সমর্থন নিয়ে তালমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পেতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে। এটা আওয়ামীলীগের জন্য লজ্জাজনক ও কলঙ্কজনক বলে তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি জানান উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতারা।
বিএনপি নেতা ফিরোজ খান রাতারাতি বিএনপির থেকে আওয়ামীলীগ নেতা বনে যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে ফরিদপুরের ৪নং আমলি আদালতে একটি প্রতারনার মামলা হয়েছে। মামলাটি এখন তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে। মামলা দায়ের করেছেন নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য মো. বাবুল আক্তার।
সূত্র জানায়, ফিরোজ খান যুদ্ধাপরাধীর ছেলে হিসাবে এলাকায় আগে থেকেই পরিচিত। ফিরোজ খানের পিতা মকবুল খান উপজেলা শান্তি কমিটি (রাজাকার) সক্রিয় সদস্য ছিলেন। একাত্তরে উপজেলার শহিদনগরে পাক বাহিনীর চালানো তান্ডবে তার প্রত্যাক্ষ মদদ ও সহযোগিতা ছিলো। এছাড়া উপজেলা শান্তি কমিটির তালিকায় ১১ নাম্বারে মকবুল খানের নাম রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ৪ দলীয় জোট সরকারের সময়ে ফিরোজ খান বিএনপির ক্ষমতা ব্যবহার করে নগরকান্দার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলা-মামলায় জর্জরিত করে রেখেছিলেন। সম্প্রতি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি সংঘর্ষ ও হামলায় তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন বলেও জানা গেছে।
এদিকে ফিরোজ খানের বিরুদ্ধে নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্যাডে গণমাধ্যমে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়, নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির বর্তমান উপদেষ্টা, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, অর্ধডজন মামলার আসামি ফিরোজ খান। তার হামলা ও মামলার কারণে অনেক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এলাকা ছাড়া। ২০১৯ ইং সালে তালমা ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচনেও সে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফিরোজ খান বলেন, আমি আগে বিএনপি করতাম। এখন আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছি। আমি এখন আওয়ামী লীগ করি। তাই নৌকা প্রতিকের চেয়ারম্যান হতে চাই।
ফিরোজ খানের বিষয়ে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহা বলেন, ফিরোজ খান বিএনপির লোক। তিনি কখনোই আওয়ামীলীগ করেননি ।