করোনার মরণ থাবা থেকে বাংলাদেশ ক্রমান্বয়ে মুক্ত হচ্ছে। দেশে এখন করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। দৈনিক করোনা সনাক্তের হার ধারাবাহিকভাবে কমছে। প্রতিদিন গড়ে ৮ থেকে ১০টি জেলায় কোনো করোনা রোগী সনাক্ত হচ্ছে না। এর মধ্যে লালমনিরহাট জেলায় গত ৭ দিনের মধ্যে ছ’দিনই কোনো করোনা রোগী সনাক্ত হয়নি। এজন্য সবার মধ্যে স্বস্তি নেমে আসছে।
গত বছরে করোনার প্রকোপ শুরু হবার পর থেকে সারা দেশে আতঙ্কিত মানুষ কি ভাবে করোনা থেকে বাঁচবে, তা নিয়ে তৎপর হয়। অন্যদিকে সরকার লাগাতার লক ডাউন ঘোষণা করে মানুষকে ঘর বন্দি করে রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু দেখা যায় প্রতিদিন করোনা সংক্রমণ বাড়ছে এবং অনেকেই মৃত্যু বরণ করছেন। এরপরও মানুষকে পুরোপুরি ঘরে বন্দি করে রাখা যায়নি। তারা ঘর থেকে বেরিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জরিমানা দিয়েছে।
ঈদ করতে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে গাদাগাদি করে দেশের বাড়ি গিয়েছে। ছড়িয়েছে করোনা সংক্রমণ। অনেক পরিবারই নি:শ্ব হয়ে গেছে করোনা সংক্রমণে। কাজ হারিয়ে শহর ছেড়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে অনেকের লেখা পড়া। মরণের হাত ছানি থেকে বাঁচতে সৃষ্টিকর্তার কাছে আবেদন নিবেদন করেছেন সবাই। এ পর্যন্ত করোনার মৃত্যু হয়েছে ২৭ হাজার ৫৩১ জনের। আর এ পর্যন্ত দেশে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৫ লাখ ৫৬ হাজার ৭৫৮ জন।
করোনায় কর্মহীন মানুষের পাশে সরকারি বেসরকারি সেবার কিছু উদ্যোগ দেখা গেছে। মানুষ খেয়ে না খেয়ে কোনো রকম দিন পার করেছে। সবাই মনে প্রাণে চেয়েছে করোনা থেকে মুক্তি।
সরকার করোনা প্রতিষেধক টিকা বিভিন্ন দেশ থেকে এনেছে। নিবন্ধনের মাধ্যমে এবং দু’বার গণ টিকাদান কর্মসূচি চালু করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় আনার চেষ্টা করছে। সরকার চাইছে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে। কিন্তু ১৬ কোটি মানুষের দেশে সবাইকে টিকা দিতে প্রয়োজন যথেষ্ট সময়। টিকা কার্যক্রম চলছে। তবে মনে রাখতে হবে, টিকা নেবার পরও সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
করোনা সংক্রমণের হার কমেছে। কিন্তু করোনা চলে গেছে তা নয়। একটু অসচেতনায় তা আবারো ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। কারণ সবাই দেখেছে করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট কতটা মারাত্মক। কত দ্রুত ছড়ায় এবং কত দ্রুত মৃত্যু তরান্বিত করে। তাই সচেতন ভাবে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলে করোনাকে একবারে বিদায় জানাতে হবে।