নওগাঁর মান্দায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গোৎসবকে ঘিরে বইতে শুরু করে উৎসবের আমেজ। উপজেলায় এবার ১২৩ টি মন্ডপে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি চলছে। এরইমধ্যে মন্ডপগুলোতে প্রতিমা তৈরির প্রাথমিক কাজ শেষ হয়েছে। চলছে রঙ-তুলির কাজ। এ উৎসবকে ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরির কারিগররা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা গেছে, গতবছর উপজেলার ১৪ ইউনিয়নে ১১৩টি মন্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছিল। এবছর আরও ১০টি মন্ডপে পূজার প্রস্তুতি নিয়েছেন সম্প্রদায়ের লোকজন। এতে করে এবারে মন্ডপের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২৩ টি। এর মধ্যে ৪৫টি মন্ডপকে অধিক গুরুত্ব্পূর্ণ চিহ্নিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
সোমবার সরেজমিনে উপজেলার শামুকখোল গ্রামের মন্ডপে গিয়ে দেখা গেছে প্রতিমায় রঙের কাজ করছেন কারিগররা। এ মন্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন উপজেলার প্রসাদপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের সুভাষ চন্দ্র তরফদার। তাঁর সহযোগী হিসেবে রয়েছেন আরও তিনজন শিল্পী। এসব শিল্পীদের প্রত্যেকদিন ৩০০ টাকা করে পারিশ্রমিক দিতে হচ্ছে তাঁকে।
শিল্পী সুভাষ তরফদার বলেন, গতবছর নিজ গ্রামে প্রতিমা তৈরির কাজ করতে গিয়ে শানমেশিনের প্লেট ভেঙে দুর্ঘটনায় শিকার হন। এতে ডান চোখের দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে যায়। অনেক চিকিৎসা করেও সুস্থ হতে পারেননি।
তিনি আরও বলেন, এবারে ৬টি মন্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ করছি। চুক্তিবদ্ধ মন্ডপগুলোতে এরইমধ্যে প্রাথমিক কাজ শেষ করা হয়েছে। মন্ডপগুলোতে রঙসহ টুকটাক কাজ চলছে। ষষ্ঠী পুজার আগেই মন্ডপ কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিমা বুঝিয়ে দেওয়া হবে। বছরের অন্য সময়েও বিভিন্ন প্রতিমা তৈরির কাজ করেন।
মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান জানান, আসন্ন দুর্গাপূজা উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন করতে এরইমধ্যে মতবিনিময় সভা করা হয়েছে। মন্ডপগুলোতে পুলিশ, আনসার-ভিডিপি সদস্য ও গ্রামপুলিশ নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত থাকবে। পাশাপাশি পুলিশের ভ্রাম্যমান টিমসহ র্যাবের টহলটিম কাজ করবে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু বাক্কার সিদ্দিক বলেন, মন্ডপ কমিটির নেতৃবৃন্দদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করা হয়েছে। তাঁদের মতামতের ভিত্তিতে অধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ডপগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হবে। আসন্ন দুর্গাপূজা নির্বিগ্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবধরণের প্রস্তুতির কাজ চলছে।
ইউএনও আরও বলেন, মন্ডপ চত্বর মাদকমুক্তসহ ইভটিজিং রোধে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হবে।