সরাইলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুকে) আপত্তিকর বিষয় লিখে ষ্ট্যাটাস দেওয়ায় রবি রায় (৩৫) নামের এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। একই অপরাধে আপন বড় ভাই রতন রায় (৩৬) গ্রেপ্তারের ৫ মাস পরই ছোট ভাই রবি পুলিশ হেফাজতে। বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে প্রশাসন ও সাধারণ মানুষদের। পবিত্র মক্কা শরীফের ছবির উপরে বাজে মন্তব্য করায় ওই যুবকের বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন দুই শতাধিক লোক। বুধবার সরাইল উপজেলার অরূয়াইলে এ ঘটনা ঘটেছে। রবি রায় নিজেকে নির্দোষ দাবী করছেন। আর পুলিশ বলছেন আমরা তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, অরূয়াইলের বাদে অরূয়াইল গ্রামের অবনি রায়ের ছেলে রবি রায়। ২০০১ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রবি পরীক্ষা না দিয়ে পড়া লেখা ছেড়ে দেয়। অরূয়াইল বাজারে রয়েছে তাদের বিশাল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়াও ২০ শতাংশ জায়গার উপরে বসতবাড়ি ছাড়াও মাঠে রয়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমান মূল্যবান জমি। বাজারের দোকান পরিচালনা করেন রবি। বুধবার দুপুরের দিকে ইংরেজীতে রবি রায় লেখা ফেসবুক আইডিতে পবিত্র মক্কা শরিফের ছবির উপরে কটাক্ষ করে আপত্তিকর লেখা দেখতে পায় লোকজন। বিষয়টিকে কেন্দ্র সেখানকার মুসলিম সম্প্রদায়ের কিছু লোক ক্ষুদ্ধ হন। দুপুর ১টার দিকে যুবলীগ নেতা হোসেন খন্দকারের নেতৃত্বে দুই শতাধিক লোক এ ঘটনার প্রতিবাদে একটি মিছিল বের করেন। পুলিশ নিজ দোকান থেকে রবি রায়কে আটক করে থানায় নিয়ে যান। গত ৫ মাস আগে এমনই এক অপরাধের দায়ে রবি রায়ের আপন বড় ভাই রতন রায়কে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন পুলিশ। এখনো কারাগারে আছেন রতন। এরপরও এমনই অপরাধে জড়িয়ে যাবেন রতনের আপন ছোট ভাই রবি। এ বিষয়টি কোন ভাবেই মানতে পারছেন না রবির পরিবার ও সেখানকার ব্যবসায়িরা। তবে রবি রায়কে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে সত্য উৎঘাটনের চেষ্টা করছেন পুলিশ। রবির পরিবার ও স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, একই পরিবারের সদস্যরা বারবার লিখবে কেন? এর পেছনে কোন রহস্য রয়েছে। তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সম্পত্তির উপর কোন ভূমি খেকুর নজর পড়েনি তো? বিষয়টি ভালভাবে তদন্ত করে দেখা প্রয়োজন। পুলিশ হেফাজতে থাকা রবি রায় বলেন, আমি ঠিকমত ফেসবুক চালাতে জানি না। আমি এ কাজটি করিনি। আমরা বারবার ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছি। পুলিশ বলছেন, রবির দুটি ফেসবুক আইডি রয়েছে। একটিরও পাসওয়ার্ড জানা নেই রবির। তার স্ত্রীর রয়েছে একটি আইডি। স্ত্রীর আইডিতেও রয়েছে রবির নিজের মুঠোফোন নম্বর। সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) মো. আনিছুর রহমান বলেন, একই ব্যক্তির দুটি আইডি। তৃতীয় আরেকটি আইডি যে নেই এই নিশ্চয়তা কে দিবে? আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে বিষয়টি দেখছি। নির্দোষ কেউ হয়রানির শিকার হবে না। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে এমন আপত্তিকর পোষ্ট দাতাকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। কাউকে আইন হাতে তুলে নেয়ার সুযোগও দিব না। গতকাল সন্ধ্যায় এ ঘটনাটির খুঁজ খবর নিতে সরাইল থানায় আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা শাহিন মিয়া। আর বিকেলে অরূয়াইলে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক মৃদুল।