বাংলাদেশের সাগরে ভারতীয় কোম্পানি তেল-গ্যাস অনুসন্ধান শুরু করেছে। কক্সবাজার জেলার মহেশখালীর উপকূলে গত সপ্তাহে ওই অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু হয়। অফশোর ৪ নম্বর ব্লকে ৪ হাজার ২০০ মিটার গভীরে খননকাজ শুরু করেছে ভারতীয় কোম্পানি ওএনজিসি ভিদেশ লিমিটেড (ওভিএল)। প্রথম ভারতীয় কোম্পানি হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করলো। অফশোর ৪ ও ৯ ব্লকে ওভিএলের অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ওএনসিজির বিদেশী বিনিয়োগ শাখা এবং অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেডের (ওআইএল) যৌথ কনসোর্টিয়াম ওই অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করছে। পেট্রোবাংলা সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে পিএসসি চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রডাকশন কোম্পানির (বাপেক্স) সঙ্গে ওএনজিসি ও ওভিএল ২০১৪ সালে চুক্তি স্বাক্ষর করে। ৪ ও ৯ নম্বর ব্লকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে ওএনজিসি ও ওআইএলের ৪৫ শতাংশ করে মালিকানা রয়েছে। বাপেক্সের বাকি ১০ শতাংশ। বাণিজ্যিকভাবে তেল-গ্যাস আবিষ্কার ও উত্তোলনযোগ্য হওয়ার আগ পর্যন্ত সব ধরনের খরচ ভারতীয় কোম্পানি দুটি সমানভাবে বহন করবে। বিগত ২০১৯ সালে ব্লকে রিগ বসানোর আগে ওএনজিসি খননকাজের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী গত বছরের মার্চে খননকাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কভিড মহামারীর কারণে তা পিছিয়ে যায়।
সূত্র জানায়, পেট্রোবাংলা বিগত ২০১৪ সালে অগভীর সমুদ্রের ৪ ও ৯ নম্বর ব্লকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে ওএনজিসির সঙ্গে দুটি উৎপাদন অংশীদারি চুক্তি (পিএসসি) সই করে। গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য বঙ্গোপসাগরের অফশোর ও অনশোরে (গভীর ও অগভীর) মোট ২৬টি ব্লক রয়েছে। তার মধ্যে গভীর সমুদ্রে ১৫টি ও অগভীর সমুদ্রে ১১টি ব্লক রয়েছে। বিগত ১৯৯৬ সালে সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান শুরু হয়। কেয়ার্নস এনার্জি অগভীর সমুদ্রের ৯ নম্বর ব্লকে ওই সময় নতুন একটি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করে। ১৯৯৮ সালে সেখান থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু হলেও তা দ্রুত মজুদ ফুরিয়ে যাওয়ায় ২০১৩ সালে গ্যাসক্ষেত্রটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। তারপর ২০০৮ সালে গভীর সমুদ্রে ডিএস-১০ ও ডিএস-১১ নম্বর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জ্বালানি কোম্পানি কনোকোফিলিপস ব্লক ইজারা নেয়। দুই বছর অনুসন্ধানের পর গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মতপার্থক্যে ওই কোম্পানিটিও চলে যায়। তারপর ২০১২ সালে আরেক দরপত্রের মাধ্যমে গভীর সমুদ্রের ৩টি ব্লকে (ডিএস-১২, ডিএস-১৬ ও ডিএস-২১) অনুসন্ধানের জন্য যৌথভাবে দর প্রস্তাব জমা দিয়েছিল কনোকোফিলিপস ও স্টেট অয়েল।