লক্ষ্মীপুরেও এবার শিক্ষার্থীদের চুল কাটার ঘটনায় মাদ্রাসা শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির মঞ্জুর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। শনিবার সকালে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রাতে চুল কেটে দেওয়া এক শিক্ষার্থীর মা বাদী হয়ে রায়পুর থানায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। এর আগের শুক্রবার সাড়ে ৮টার দিকে রায়পুর উপজেলার বামনী ইউনিয়নের কাজিরদিঘীরপাড় এলাকা থেকে তাকে আটক করে রায়পুর থানা পুলিশ।
এদিকে মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষ গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় শিক্ষার্থীদের মাধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও মাদ্রাসার পরিচালনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা বালাগাত উল্ল্যাহ্ জানান, গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষক মঞ্জুরুল কবিরের রিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
তবে ঘটনার শিকার শিক্ষার্থীরা জানায়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর শ্রেণিকক্ষে পাঠ্য কার্যক্রমে অংশ নেয় তারা। তাদের ইংরেজি ক্লাস চলাকালীন মাদ্রাসার জ্যেষ্ঠ শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির এসে শ্রেণিকক্ষ থেকে ছয় শিক্ষার্থীকে ডেকে ক্লাসের বাইরে বারান্দায় নিয়ে আসেন। এসময় তিনি ছাত্রদের সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে একটি কাঁচি এনে একে-একে সবার মাথার সামনের অংশের চুল কেটে দেন। চুল কাটার পর লজ্জায় তারা ক্লাস না করে মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে যায়। এরপর মাদরাসার দাখিল শ্রেণির শিক্ষার্থী নাজমুল আলম ও ফজলে রাব্বীসহ কয়েকজন এর প্রতিবাদ জানালে পরবর্তীতে মাদরাসার অন্যান্য শিক্ষকদের মধ্যস্থতায় ছাত্ররা তাদের শ্রেণী কক্ষে ফিরে যায়।
শিক্ষার্থীর একজন বলেন, আমাদেরকে ৭দিন আগে চুল কাটার নির্দেশ দিলেও আমরা তা না মানায় স্যার আমাদের চুল কেটে দিয়েছেন। এ ঘটনার ১ মিনিট ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও শুক্রবার সকাল থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
রায়পুর উপজেলা শিক্ষক সমিতি সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন বলেন,বর্তমান প্রেক্ষাপট আর পূর্বের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ন ভিন্ন। তাই, সরকারের সকল নীতিমালা মেনেই শ্রেনিকক্ষে পাঠদান করা উত্তম। তবে, এই ঘটনার কথা আমি জেনেছি এবং শুনেছি, তবে শিক্ষক নিজে চুল না কেটে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া উচিত ছিল।
রায়পুর থানার ওসি আবদুল জলিল বলেন, শিক্ষার্থীদের চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় শিক্ষককে শুক্রবার রাতে আটক করা হয়েছিল। এরপর রাতে এক শিক্ষার্থীর মা চুলকাটার ঘটনায় বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশ রাত সাড়ে ১২টার দিকে ওই লিখিত অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথ, এক ছাত্রের মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। এর আগে শুক্রবার সাড়ে ৮টার দিকে রায়পুর উপজেলার বামনী ইউনিয়নের কাজিরদিঘীরপাড় এলাকা থেকে তাকে আটক করে রায়পুর থানা পুলিশ। শনিবার সকালে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।