পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলায় আসন্ন শারদীয় দূর্গা পূজাকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছে কারিগররা। বাঙালী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপুজো উপলক্ষে দুমকি উপজেলায় এ বছর ১০ টি পৃথক মন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে দূর্গা মায়ের অর্চনা। উপজেলার মুরাদিয়া বোর্ডঅফিস দূর্গা মন্দির, মুরাদিয়া দূর্গা মন্দির, মুরাদিয়া পাইনবাড়ী দূর্গা মন্দির, মধ্য মুরাদিয়া দূর্গা মন্দির, দক্ষিণ মুরাদিয়া দূর্গা মন্দির, দুমকি দূর্গা মন্দির, রাজাখালী দূর্গা মন্দির, দক্ষিণ জলিশা দূর্গা মন্দির, উত্তর পাঙ্গাশিয়া দূর্গা মন্দির এবং দক্ষিণ পাঙ্গাশিয়া দূর্গা মন্দিরে দূর্গোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
শুক্রবার দিনভর উপজেলার পূজা মন্ডপগুলো ঘুরে জানা গেছে, আর কয়েকদিন পরেই শুরু হচ্ছে পূজা। তারই ধারাবাহিকতায় উপজেলার সব ক'টি মন্দিরেই চলছে জোরেশোরে প্রস্তুতি। শারদীয় দূর্গোৎসবকে পরিপূর্ণ রূপ দিতেই মন্দিরগুলোতে চলছে পূজার ব্যাপক আয়োজন। প্রতিমা শিল্পীদের সুনিপুণ ছোয়া আর রং-তুলির আচরে দেবী দূর্গার অনিনদ্য সুন্দর রুপ দিতে দিন ও রাতভর চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। ইতোমধ্যে প্রতিমার কাঠামোর মাটির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এরপর শুরু হবে রং ও সাজসজ্জার কাজ। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবকে ঘিরে উপজেলার হিন্দুপাড়াগুলোতে আগাম শারদীয় উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। উচু-নিচুর বিভেদ ভুলে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে একত্র করে মহা-সম্মেলন হয় বলে এ পূজাকে বলা হয় সারবজনীন পূজা। প্রতিটি পূজামন্ডপের জন্য তৈরি করা হচ্ছে দূর্গা, লক্ষী, সরস্বতী, কার্তিক, গনেশ, অসুর, সিংহ, মহিষ, পেচা, হাঁস, সর্পসহ বিভিন্ন প্রতিমা। হিন্দু সম্প্রদায়ের দূর্গতিনাশিনী দুর্গাদেবীকে বরণ করে নিতে মন্ডপে প্রতিমা তৈরি ও সাজ-সজ্জার কাজ চলছে। ঢাক, ঢোল বাদ্যকাররা বাদ্যযন্ত্র ঠিকঠাক করে নিচ্ছে। মূর্তি গড়া শেষে রং-তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হবে প্রতিমা। দেবীকে স্বাগত জানাতে সরবত্র আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা, নারী-পুরুষসহ সব বয়সী মানুষ এ সরববৃহৎ শারদীয় উৎসবকে স্বার্থক করতে প্রহর গুনছে। সময় যতই সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ততই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে দেখা গেছে পূজা উৎসবের প্রস্তুতি। দুমকির পূজা মন্ডপগুলোতে চলছে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। খড়, বাশ, সুতলী ও মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজও একেবার শেষের দিকে।প্রতিমাগুলোর সৌন্দরয্য বর্ধনের জন্য তৈরি করা হচ্ছে মাটির বাহারি নকশা।প্রতিমাগুলো একটু শুকালেই দেওয়া হবে রং-তুলির আচর। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে, মা দূর্গা চলতি বছরের ১১ অক্টোবর ঘোটকে (ঘোড়ায়) চড়ে মহাষষ্ঠীর দিনে পৃথিবীতে আসবেন, মহিশ অসুরকে বধ করার মাধ্যমে পৃথিবী থেকে সকল দূর্গতি নাশ করে ১৫ই অক্টোবর দশমির মহাপ্রলয়ের দিনে দোলায় চড়ে আবার স্বর্গে ফিরে যাবেন। আসন্ন দূর্গাপূজাকে ঘিরে দুমকি উপজেলার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে বইছে উৎসবের আমেজ। দুমকি উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য রিপন চন্দ্র শীল জানান, মহামারি করোনায় সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক সব নিয়ম এবং স্বাস্থবিধি মেনে এবার উপজেলার ১০ টি মন্ডপে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এই পূজোর মধ্য দিয়ে সকলের মধ্যকার ভ্রাতৃত্ব বন্ধন আরও সুদৃঢ় হবে বলেও আমরা বিশ্বাস করি। দুমকি থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুস সালাম বলেন, আসন্ন দূর্গাপূজো দুমকি উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের মোট ১০ টি পূজামন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে। পূজা মন্ডপগুলোতে কঠোর নিরাপত্তায় সারবক্ষনিক পুলিশ মোতায়েন থাকবে।