বরগুনার পাথরঘাটায় হাড়িটানা ছালেহিয়া দাখিল মাদ্রাসার এক ছাত্রীকে উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে তিন কিশোরকে গুরুতর আহত করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের পাথরঘাটা-পদ্মা সড়কের আলমের দোকানের পুর্ব পাশে এ ঘটনা ঘটে। এর আগের দিন রাত ৮ টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ‘তুমি আর আমি’ নামে একটি ম্যাসেঞ্জার হামলার প্রস্তুতি নেয়া হয়। রাহাত, রাব্বি ও ইমরান ওই ম্যাসেঞ্জারে রামদা ও লোহার পাইপ দিয়ে হামলা করা হবে এমন ছবিও দেয়া হয়।
আহতরা হলো, পশ্চিম হাড়িটানা গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে মো. রাকিব (১৫), মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে জাকারিয়া (১৫) ও লাল মিয়া খানের ছেলে ইমরান (১৭)। হামলাকারীদের ভয়ে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আহতরা স্থানীয় পর্যায় চিকিৎসা নিয়েছেন। ঘটনার পরপরই এক সংবাদকর্মীর মুঠো বার্তার ভিত্তিতে পাথরঘাটা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছায়।
আহতেদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মাদ্রাসার অস্টম শ্রেণির এক ছাত্রী (১৪) একই এলাকার এসএসসি পরীক্ষার্থী মো. রাকিবকে পছন্দ করতো। অপরদিকে একই মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্র রাব্বিও ওই ছাত্রীকে পছন্দ করতো, তাতে ওই ছাত্রী রাজি না হওয়ায় রাব্বি পথেঘাটে উত্ত্যক্ত করতো। সবশেষ সোমবার উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করে রাকিব। এর জের ধরে ‘তুমি আর আমি’ নামে একটি ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে রাব্বি, রাহাত ও ইমরান রাকিবকে মারধর করার জন্য পরিকল্পনা করে এবং রামদা ও লোহার পাইপ দিয়ে হামলা করবে তার ছবিও ওই গ্রুপে পোষ্ট করে তারা। ওই ম্যাসেঞ্জার গ্রুপের সদস্য ছিল রাকিব ও ওই ছাত্রী।
পরিকল্পনা অনুযায়ী মঙ্গলবার রাব্বি, রাহাত, ইমরানসহ ৬ থেকে ৭ জন বখাটে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কোড়ালিয়া বাজার থেকে বাড়িতে যাওয়ার পথে হাড়িটানা আলমের দোকানের পুর্ব পাশে রাকিবকে লোহার পাইপ, মোটরসাইকেল হাইডোলিক পাইপ এবং হকিস্টিক দিয়ে হামলা করে। এ সময় রাকিবকে রক্ষা করতে আসলে জাকারিয়া ও ইমারনকেও পিটিয়ে আহত করে। এতে জাকারিয়ার ডান হাত ভেঙ্গে যায় এবং রাকিবের সমস্ত শরীরের এলোপাতারি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা আসলে রামদা, হকিস্টিক ও লোহার পাইপ উঁচিয়ে বীরদর্পে স্থান থেকে চলে যায়।
স্থানীয় শাহ আলম মিস্ত্রী বলেন, রাহাত এর আগেও অনেকে মেয়েকে উত্ত্যক্ত করেছে। অনেক মেয়েকে জোর করে বাড়িতে নিয়ে যেত। তাছাড়া তার বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে একটি কাঠের বেঞ্চ বসিয়ে প্রতিনিয়ত মাদক সেবন করে রাহাত। প্রতিবাদ করলে মারধর করার হুমকি দেয়।
আহত রাকিব, ইমরান ও জাকারিয়া জানান, বিভিন্ন সময় ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করতো রাহাতসহ তার সহযোগিরা। রাস্তায় উঠলে ওই ছাত্রীর পিছু নিত রাহাত। আমরা এর প্রতিবাদ করি। এর জের ধরেই আমাদেরকে মারধর করেছে। আমরা তাদের ভয়ে এখন পর্যন্ত উন্নত চিকিৎসা নিতে যাওয়ার সাহস পাইনি।
অভিযুক্ত রাহাতের বাড়িতে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে রাহাতের বাবা সোহরাব হোসেন বলেন, আমার ছেলে মাদকাসক্ত। ওকে আমি বারবার নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি।
পাথরঘাটা সার্কেল তোফায়েল হোসেন সরকার বলেন, আমি ম্যাসেঞ্জার গ্রপের পরিকল্পনা দেখেছি। আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি। এ বিষয় অপরাধীরা কেউ ছার পাবেনা।