রংপুরের পীরগঞ্জে প্রতারণার মাধ্যমে সরকারী ব্রীজসহ পানি নিস্কাশনের খননকৃত খাল বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় ভূমি জালিয়াত চক্র নানা কৌশলে সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারিদের ম্যানেজ করে ২ একর ৮১ শতাংশ জমি ক্রয়ের পায়তারা করছে। এরইমধ্যে ৫০ শতাংশ জমি রেজিষ্ট্রিও হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চৈত্রকোল ইউনিয়নের অনন্তরামপুর মৌজায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,চৈত্রকোল ইউনিয়নের হরনাথপুর গ্রামের মৃত- কিনা মামুদের পুত্র আজিতুল্লাহ সরকার একজন ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ছিলেন। ঐ সময় তিনি ও তার পুত্র আবদুল হামিদ সরকারের নামে অনন্তরামপুর মৌজার ২ একর ৮১ শতাংশ জমি যার জেএল নং- ৫০, খতিয়ান নং- ১৫/১, দাগ নং- ৬০০ (সাবেক দাগ- ৭২৯) সরকারের নিকট থেকে নব্বই দশকে বন্দোবস্ত নেন। পরে আজিতুল্লাহ সরকার মারা যান। উপজেলা ভূমি অফিস জানায়, সিএস ও এসএ খতিয়ান মোতাবেক ওই জমির মালিক ছিল বাংলাদেশ সরকার এবং ওই জমি (উত্তর-দক্ষিণ লম্বা) নদী হিসেবে উল্লেখ ছিল। কতিপয় ভূমি অফিসের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ম্যানেজ করে ও বন্দোবস্তের কাগজ গোপন রেখে বর্তমান রেকর্ড তাদের নিজেদের নামে করেন। বর্তমান রেকর্ডমূলে ওই জমি নিজেদের দাবি করে আবদুল হামিদ সরকার মোট জমির মধ্যে ৫০ শতাংশ জমি এলাকার চিহ্নিত ভূমি জালিয়াত চক্রের নিকট গোপনে তা মোটা অংকের বিনিময়ে বিক্রির ঘটনা ঘটিয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ২’শ একর এলাকা জুড়ে উপজেলার চৈত্রকোল ইউনিয়নের চৈত্রকোল বিল। বিলসহ ওই এলাকায় ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের প্রায় ৯’শ একর জমি রয়েছে। প্রতি বর্ষা মৌসুমে ওই সব এলাকা প্লাবিত হয়ে উঠতি ফসলসহ ঘর-বাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। যে কারণে গত ২০২০-২১ অর্থবছরে চৈত্রকোল বিলের পানি নিস্কাশনের জন্য অনন্তরামপুর মৌজার উল্লিখিত জমিতে চৈত্রকোল বিল হতে করতোয়া নদী পর্যন্ত ১০ কি:মি খাল খনন করা হয় এবং খালের উপর একটি ব্রীজও নির্মাণ করা হয়। সরকারিভাবে খননকৃত খালসহ ব্রীজটিকে দলা জমি দেখিয়ে পুরো জমির বাকি অংশ ওই ভূমি জালিয়াত চক্রের নিকট বিক্রির পায়তারা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে ভেন্ডাবাড়ী ইউনিয়ন সহকারি ভূমি কর্মকর্তা হামিদুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি সরেজমিন তদন্তপূর্বক ওই জমি খাস খতিয়ানে আনার জন্য উপজেলা ভূমি অফিসে আবেদন করবো। উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রার খালেদা সুলতানা’র সঙ্গে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে রংপুর জেলা রেজিষ্ট্রার আবদুস ছালাম বলেন, বিষয়টি আমার অজানা, আপনার মাধ্যমেই প্রথম জানলাম, এমন ঘটনা ঘটে থাকলে অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।