রাজশাহীর তানোরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বাড়ি দখলে ব্যর্থ হয়ে মেয়ের মৃত নবজাতক পুত্র সন্তানের মৃত্যুর ঘটনার দায় চাপিয়ে সৎ ভাইদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন একসৎ বোন। এ ঘটনায় গ্রামবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও বিরুপপ্রতিকৃয়ার পাশাপাশি উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
মামলার বিবরণ, পুলিশ ও গ্রামবাসী সুত্রে জানা গেছে, তানোর সদর গ্রামের মৃত নাদের চৌধুরীর ছেলে আশরাফ চৌধুরী (৫০) ও তার ভাই ইনসান চৌধুরী (৪৫) এর সাথে সৎ বোন স্বামী পরিত্যাক্তা শাহিনুর অরফে নাহিনুর (৪০) এর দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে।গত ৩১/০৮/২০২১ ইং তারিখে সৎ বোন শাহিনুন নুরনাহার তার নিজ ভাই শরিফুল ও রফিকুলসহ লোকজন নিয়ে জোরপুর্বক আশরাফ চৌধুরীর বাড়িতে উঠে আশরাফ চৌধুরীসহ তার স্ত্রীকে মারধর শুরু করেন। এ সময় ৯৯৯ ফোন করলে তানোর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন এবং উভয় পক্ষকে থানায় কাগজপত্রসহ ডেকে নিয়ে আপোষে বসেন এবং বিষয়টি আপোশ নিস্পত্তি করেন।
গত ৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইং তারিখে শাহিনুরের নাবালিকা কন্য আশা (১৮)'র স্থানীয় ক্লিনিকে সিজারিয়ান করে পুত্র সন্তান জন্মের পর উভয়ের অবস্থা আশংখ্যা জনক হওয়ায় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ রাজশাহী মেডিকেলে রেফার্ট করেন। রাজশাহী মেডিকেলে নেয়ার পর নবজাতককে মৃত ঘোষনা করে মাকে ভর্তি করেন। পরদিন ওই নবজাতককে তার পিতার বাড়ি বিল্লীতে দাফন করা হয়।
নবজাতক মৃত্যুর ঘটনার দায় চাপিয়ে শাহিনুর বাদি হয়ে সৎ ভাই আশরাফ চৌধুরী তার স্ত্রী রাজিয়া বেগম ও আশরাফের ভাই ইনসান চৌধুরীসহ ৩ জনকে আসামি করে জেলা রাজশাহীর বিগ্গ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত ৬ এ একটি মামলা দয়ের করেন। আদালতে মামলাটি থানায় রেকর্ড করে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে প্রেরনের জন্য তানোর থানাকে নির্দেশ দেন। তানোর থানা পুলিশ মামলা রেকর্ড করে তদন্ততাধীন রয়েছে।
মামলার বিবরনে ০২/০৯/২০২১ইং তারিখে মারামারির যে তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ওই কোন ধরনের মারামারির কোন ঘটনা ঘটেনি বলে জানান গ্রামবাসীসহ প্রতিবেশীরা। গ্রামবাসীরা জানান, শাহিনুরের মেয়ে আশাকে বাল্য বিয়ে দিয়েছেন তা মা। বাচ্চা প্রসবের তারিখ ছিলো ০৯/১০/২০২১ইং কিন্তু প্রসুতীসহ বাচ্চা পুষ্টিহীনতায় ভোগার কারণে নির্ধারিত তারিখের ৬ দিন আগে সিজার করে বাচ্চা বের করার পর বাচ্চা মারা যায় এটা সবাই জানে। কিন্তু শুধুমাত্র জমিজমা বিরোধের জেরে শাহিনুর তার মেয়ের মৃত নবজাতক মৃত্যুর ঘটনার দায় সৎ ভাই ও ভাবির উপর চাপিয়ে আদালতে করা মামলাটি সম্পূর্ন সাজানো মামলা।
রোববার ওই মামলায় জামিনের আবেদন জানিয়ে ৩ আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় আদালতে বিচারক মামলার ১ নং আসামি আশরাফ চৌধুরীর জামিন নামুন্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন এবং অপর ২ আসামি ইনসান চৌধুরী ও আশরাফ চৌধুরীর স্ত্রী রাজিয়াকে জামিন প্রদান করেন। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে, শাহিনুরের পক্ষে থাকা তার নিজ দুই ভাই শরিফুল ও রফিকুল অকপটে মামলাটি মিথ্যে স্বীকার করে আপোশ করে দেয়ার অনুরোধ করেন। তবে, শাহিনুর কোন কথা বলতে রাজি হননি।